টানা পতনে শেয়ারবাজার, ৮ মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

টানা দরপতনের সঙ্গে লেনদেন খরা প্রকট হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকও কমেছে। একই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে দুইশো কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৮ মার্চের পর বা প্রায় গত আট মাসের মধ্যে একদিনে সর্বনিম্ন লেনদেন দেখলো শেয়ারবাজার। পাশাপাশি চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসেই হলো দরপতন।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৫ পয়েন্ট। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এতে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

তবে দুপুর ১২টার পর থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দরপতনের মাত্রা। এতে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির। আর ১৭৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান স্থান করে নেওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন কমে দুইশো কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৭২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর আগে গত ২৮ মার্চ ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর বাজারটিতে আর এতো কম লেনদেন হয়নি।

লেনদেন খরার বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৯৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, প্যাসেফিক ডেনিমস, ফু-ওয়াং সিরামিক, ইয়াকিন পলিমার, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, এমারেল্ড অয়েল এবং ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৭টির এবং ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

এমএএস/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।