শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই
টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিদিনেই লেনদেন অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। সেইসঙ্গে কমছে মূল্যসূচক। পাশাপাশি কমে এসেছে লেনদেনের গতিও।
গত কয়েক কার্যদিবসের মতো সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে দুই বাজারেই কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন কমে ৮০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। লেনদেন ও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও ডিএসইতে বেড়েছে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক।
দিনের লেনদেন শেষে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও এদিন লেনদেনের শুরুর চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ২৯ পয়েন্ট। লেনদেনের প্রথম আড়াই ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে।
তবে দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসতে থাকে। লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এ প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৯৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৫টির। আর ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবসের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১৮৮ পয়েন্ট। এর আগে ১০ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৬৮ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১০৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের ৩৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং সিরামিক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আফতাব অটোমোবাইল, মুন্নু ফেব্রিক্স, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, লাভেলো আইসক্রিম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং জেমিনি সি ফুড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬১টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/এএসএম