শেষ পর্যন্ত পতনেই শেয়ারবাজার
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রধান মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। এর মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবস প্রধান মূল্যসূচক কমলো।
প্রধান মূল্যসূচক কমলেও এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে। ফলে বাছাই কারা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক সামান্য বেড়েছে। আর লেনদেন কমে ৭০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
দিনের লেনদেন শেষে দুই বাজারেই প্রধান মূল্যসূচক কমলেও এদিন লেনদেনের শুরুর চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে প্রথম দেড় ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এই প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকে দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা হয় দাম কমার তালিকায়।
এতে দাম বাড়ার তালিকা কিছুটা ছোট হয়েছে। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টায় যেখানে ২৫০ এর বেশি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় ছিল, দিনের লেনদেন শেষে তা কমে ১৮৪টিতে দাঁড়িয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। আর ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবসের পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১৯০ পয়েন্ট। এর আগে ১০ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৬৮ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৬৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের ৩১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আফতাব অটোমোবাইল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ফু-ওয়াং সিরামিক, লাভেলো আইসক্রিম, মুন্নু ফেব্রিক্স, এবি ব্যাংক এবং একমি পেস্টিসাইড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৯টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ/এএসএম