এবার উল্টো পথে খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

কিছুদিন আগে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও এখন ধারাবাহিকভাবে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার দাম কমেছে। গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমলেও সব থেকে বেশি কমেছে খুলনা প্রিন্টিংয়ের।

বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে খুব একটা আগ্রহী না হওয়ায় সপ্তাহজুড়েই দাম কমেছে। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ২১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৯ টাকা ৩০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৬৭ কোটি ৯২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৮০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৪৩ টাকা ১০ পয়সা।

শুধু গত সপ্তাহ নয় ৫ ফেব্রয়ারির পর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমছে। গত ৫ ফেব্রয়ারি কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা। এ হিসেবে শেষ ১২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ২৩ টাকা। অর্থাৎ শেষ ১২ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১৬৭ কোটি ৯৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।

এখন এমন দরপতন হলেও এর আগের দুই সপ্তাহ কোম্পানিটির শেয়ার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। গত ১৬ জানুয়ারি কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ২৪ টাকা ৬০ পয়সা। এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। দফায় দফায় বেড়ে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত উঠে। এরপর এখন কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমতে দেখা যাচ্ছে।

কোম্পানিটির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বাড়ার প্রেক্ষিত্রে ডিএসই থেকে কয়েক দফা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়। সেই সঙ্গে ডিএসই থেকে তথ্য প্রকাশ করা হয় কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ। এ বিষয়ে ডিএসই জানায়, প্রতিনিধি দল পরিদর্শনে গিয়ে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ পেয়েছে।

অবশ্য এরপরও দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংসহ কয়েকটি কোম্পানিকে জেড গ্রুপে নিয়ে যায় ডিএসই। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে।

শেয়ার দামে এমন উত্থান-পতন হওয়া কোম্পানিট সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের দশমিক ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০১৯ সালে ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এছাড়া ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৪ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। এর বাইরে কোম্পানিটির লভ্যাংশের বিষয়ে ডিএসই থেকে তথ্য পাওয়া যায়নি।

২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৭৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজারটি। এর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৯ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার আছে।

এদিকে দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের পরেই গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় ছিল বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপারের। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ দাম কামার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে সাফকো স্পিনিং।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, আফতাট অটোমোবাইলের ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের ১১ দশমিক ৯৯ শতংশ এবং সিকদার ইন্স্যুরেন্সের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ দাম কমেছে।

এমএএস/এমআরএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।