বস্ত্র দিবস উদযাপন ২৭ ফেব্রুয়ারি, সম্মাননা পাচ্ছে যারা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩১ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

‘স্মার্ট টেক্সটাইলে সমৃদ্ধ দেশ-বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বস্ত্র দিবস উদযাপন করা হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বস্ত্রখাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষতা সাধন, বস্ত্র শিক্ষার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখায় ১১ অ্যাসোসিয়েশন/প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হবে।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

মন্ত্রী জানান, ২৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) বস্ত্র দিবসের মূল অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপাতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করার সম্মতি দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, অনুষ্ঠানে বস্ত্রখাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষতা সাধন, বস্ত্র শিক্ষার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখায় ১১টি অ্যাসোসিয়েশন/প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

এরমধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড অ্যাক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমইএ), বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ), বাংলাদেশ গার্মেন্টস্ বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ), বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ), বাংলাদেশ স্পেশালাইজড টেক্সটাইল মিলস্ অ্যান্ড পাওয়ার লুম ইন্ডাস্টিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিএসটিএমপিআইএ), বাংলাদেশ এমব্রয়ডারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সসোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) এবং বাংলাদেশ জাতীয় তাঁতি সমিতি।

নানক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁতশিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭২ সাল থেকেই তাঁতশিল্পের মান উন্নয়নের পাশাপাশি বস্ত্রখাতকে সমৃদ্ধ করার নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন। এ ধারাবাহিকতায় বর্তমানে তৈরি পোশাকখাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ ভাগ অর্জিত হয় বস্ত্রখাত থেকে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও বস্ত্রখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ প্রেক্ষাপটে এবারের জাতীয় বস্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘স্মার্ট টেক্সটাইলে সমৃদ্ধ দেশ-বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বস্ত্র খাতকে যুগোপযোগীকরণ, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনের সহায়তাকরণ, টেকসই উন্নয়ন, বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ, আধুনিকায়ন, সমন্বয় ও মান নিয়ন্ত্রণ, বস্ত্রশিক্ষা ক্ষেত্রে চাহিদা ভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন, গবেষণা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দক্ষ জনবল সৃষ্টি এবং অন্যান্য কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে ‘বস্ত্র নীতি, ২০১৭’ এবং ‘বস্ত্র আইন, ২০১৮’ এবং ‘বস্ত্রশিল্প (নিবন্ধন ও ওয়ানস্টপ সার্ভিস কেন্দ্র) বিধিমালা, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ নীতি সহায়তা সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

তিনি বলেন, বস্ত্র অধিদপ্তর সরকারি পর্যায়ে ৪১টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ১১টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট এবং ৯টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মাধ্যমে স্বল্প খরচে বস্ত্র খাতের জন্য দক্ষ জনবল, সুপারভাইজার, ডিপ্লোমা প্রযুক্তিবিদ সর্বোপরি স্নাতক পর্যায়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি বস্ত্র শিল্প খাতে সরবরাহ করছে। এছাড়া কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনবলের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষ জনবলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এ ধরনের আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের কাজ চলমান।

তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুকে সামনে রেখে শিল্পায়নের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় ১২০ একর জমির উপর ‘শেখ হাসিনা তাঁত পল্লি’ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।

এছাড়াও প্রায় ১৭০ বছর পূর্বে হারিয়ে যাওয়া গৌরবময় ঢাকাই মসলিন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় মসলিন সুতা তৈরির তুলার জাত পুনরুদ্ধার এবং ৭০০-১০০০ কাউন্টের সুতা তৈরিসহ মসলিন শাড়ি তৈরির প্রযুক্তি উন্মোচন করেছে। দেশের সাধারণ তাঁতীদের মাঝে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভায় ‘ঢাকাই মসলিন হাউজ’ স্থাপন করেছি।

তিনি বলেন, রেশম শিল্পের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে দেশব্যাপী তুঁতচাষ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্ক সম্প্রসারণে অধিকতর উদ্যোগ গহণ করা হয়েছে।

এমএএস/এমএইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।