ট্যুর অপারেটর ও আবাসিক হোটেলের ভ্যাট কমানোর আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ট্যুর অপারেটরদের ১০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর এবং আবাসিক হোটেলের ওপর আরোপিত ভ্যাটের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

সেই সঙ্গে, বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে ভিসা ব্যবস্থা সহজতর করা ও বিমান ভাড়ায় বিশেষ সুবিধা প্রদান, পর্যটন শিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও গাড়ি আমদানিতে শুল্ক ছাড়, এবং সরকারি রিক্যুইজিশন নামে পর্যটন ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এফবিসিসিআইয়ের ট্যুর, ট্রাভেল এবং হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, পর্যটন অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি খাত। আমাদের জিডিপিতে এই খাতের অবদান মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এটিকে অন্তত ১০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। পর্যটন খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।

এসময় কমিউনিটি ট্যুরিজম, ইকো ট্যুরিজম, রেলিজিয়াস ট্যুরিজমসহ পর্যটন খাতের জন্য নতুন নতুন পণ্য উন্নয়নের আহ্বান জানান মাহবুবুল আলম। খাতের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আহ্বান করেন তিনি। সব অংশীজনদের প্রস্তাবনা বিশ্লেষণ করে পর্যটনবান্ধব নীতিমালা উন্নয়নে এফবিসিসিআই কাজ করবে বলে জানান সংগঠনটির সভাপতি।

সভায় অংশ নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, পর্যটন এমন একটি খাত যা গোটা অর্থনীতি বদলে দিতে পারে। সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই শিল্পকে কীভাবে সামনে এগিয়ে নেবে সেই কর্মপরিকল্পনা জরুরি।

পর্যটন খাতে বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন। তিনি বলেন, টুরিস্ট স্পটগুলোর টয়লেট ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা উন্নত করা জরুরি। এটা একজন টুরিস্টের মৌলিক প্রয়োজনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। স্পটের নিকটবর্তী টয়লেট ব্যবস্থা উন্নত না করা গেলে টুরিস্টরা সেখানে যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না। পাশাপাশি পরিবেশ ও নিরাপত্তার বিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এসব বিষয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সমস্বরে কথা বলা উচিত।

কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ এবং এফবিসিসিআইযের পরিচালক আবু মুর্শেদ চৌধুরী জানান, বাংলাদেশের জন্য পর্যটন শিল্প হতে পারে তৈরি পোশাকের পরে অন্যতম বৃহৎ খাত। বৈশ্বিক পর্যটকদের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে দেশের পর্যটন পণ্য ও সেবা উন্নয়নসহ ‘এক জেলা এক পণ্য’ ভিত্তিতে কৌশল গ্রহণের পরামর্শ তার।

কমিটির চেয়ারম্যান এবং ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (টোয়াব) সাবেক সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, সুযোগ পেলেই আমাদের দেশের পর্যটন সেবার মানকে ভারত, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কার পর্যটনে সেবার সঙ্গে তুলনা করা হয়। অথচ পর্যটন উন্নয়নে তারা যেসব নীতি সহায়তা পাচ্ছে, আমরা সেরকম পাচ্ছি না। উল্টো পর্যটন মৌসুমে সরকারি রিক্যুইজিশন নামে আমাদের হোটেল ও রিসোর্টের রুম, বোট হাউজ এবং অন্যান্য সেবাসমূহ অনেকটা জোরপূর্বকভাবে দখল করে রাখা হচ্ছে। এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।

বাংলাদেশে টুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তির জটিলতা দ্রুত হ্রাসের আহ্বান জানান টোয়াবের সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ে পর্যটন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ব্লগারদের দেশে এনে বাংলাদেশ ঘুরিয়ে দেখানো ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন হাই-কমিশনে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের কাজে লাগানোর পরামর্শ তার। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে বিটুবি সেশন আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

ইএআর/জেডএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।