জাতীয় বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৭ পিএম, ০৪ এপ্রিল ২০২৪

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবি বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪৪তম সভায় এ কথা জানান মন্ত্রী। ওই সভায় ব্যবসায়ীরা কিছু দাবি তুলে ধরেন।

ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সবার বক্তব্যই শুনলাম, অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। তারপর দেখা যাক। বাজেটের কার্যক্রম চলমান। সব সময় চলমান থাকে। কোনো কিছুই শেষ করা যায় না। আমাদের আরও উন্নতি হবে। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।

সভায় রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানিকারক সমিতির (বারভিডা) সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ব্যবসায়ীরা কষ্টে আছেন। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ডলারের সংকট, টাকার অবমূল্যায়ন ও সুদহার বেড়ে যাওয়ায় গাড়ি আমদানির খরচ ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। তাই গাড়ি মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

স্টিলমিল মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাসাদুল আলম বলেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্টিল শিল্পের কাঁচামাল আমদানি প্রায় বন্ধের পথে। তার ওপর দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে নতুন বিনিয়োগ আসবে কী করে?

সোনার দাম ও চোরাচালান বন্ধে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গাজীপুর চেম্বারের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাংলাদেশে এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৪ হাজার টাকা, আর সিঙ্গাপুরে ৮৬ হাজার টাকা। অথচ সিঙ্গাপুরে একটি দোকান ভাড়া ১০ লাখ টাকা ও একজন কর্মচারীর বেতন ৪০ হাজার টাকা। আর বাংলাদেশে দোকান ভাড়া ৫০ হাজার বা এক লাখ টাকা এবং কর্মচারীর বেতন ১০ হাজার টাকা। তাহলে বাংলাদেশে সোনার দাম এতো বেশি কেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পারলে রাজস্ব আয় বাড়বে।

মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় শিল্পের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। বাড়তি দামেও গ্যাস-বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এলপিজি দিয়েও কারখানা চালানো সম্ভব নয়। শিল্পে গ্যাস-বিদ্যুৎ দিলে সরকার যতো রাজস্ব চায়, ব্যবসায়ীরা তা দিতে পারবে।

মেট্রোপলিটন চেম্বারের (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানো হলেও শিল্প সেই সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। নগদ লেনদেনের শর্ত জুড়ে দেওয়ায় অনেক কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠানকেও আগের হারে করপোরেট কর দিতে হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় একটি অংশ অনানুষ্ঠানিক। তাই বাধ্য হয়ে কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠানকেও নগদে লেনদেন করতে হয়।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার। অর্থনীতি ঠিক থাকলে দেশ ঠিক থাকবে। ব্যবসায়ীরা অনৈতিক কিছু চায় না, ব্যবসায়ীরা চায় ব্যবসা সহজীকরণ করা হোক। কর্মসংস্থানবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন করা হোক। কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের হয়রানি আছে। এগুলো সংস্কারের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব নীতি দেওয়া হোক।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম উপস্থিত ছিলেন।

আরও ছিলেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, নিটপণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।

এমএএস/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।