বিআইপিডি’র কোটি টাকা ফেরত দিচ্ছে না ফারইস্ট ফাইন্যান্স

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৯ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (বিআইপিডি)-এর মেয়াদোত্তীর্ণ এফডিআর’র ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছে না ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এমনকি লভ্যাংশও দিচ্ছে না।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছে বিআইপিডি। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিআইপিডি’র চেয়ারম্যান মো. এহসান খসরু, পরিচালক কাজী মো. মোরতুজা আলী, জেনারেল সেক্রেটারি এ কে এম এহসানুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে বিআইপিডি’র চেয়ারম্যান এহসান খসরু লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট (বিআইপিডি) কোম্পানি আইনের অধীনে নিবন্ধিত একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যথা ব্যাংক, বিমা ও পুঁজিবাজারে কর্মরত পেশাজীবীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্রিয় বয়েছে।

বিআইপিডি ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে সর্বমোট ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার ছয়টি এফডিআর অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। সবকটি এফডিআর বিভিন্ন তারিখে (২৮/১২/২০১৮ থেকে ৩০/০৫/২০১৯ এর মধ্যে) মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড বিআইপিডির কোনো অর্থ পরিশোধ করেনি। এমনকি লভ্যাংশও প্রদান করছে না।

তিনি বলেন, এ যাবত ৫৬টি পত্র দেওয়া স্বত্বেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমন কি ২০২০ সালের পরে কোনো পত্রের জবাবও দেয়নি। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার এবং পাওনা পরিশোধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের শরণাপন্ন হয় বিআইপিডি।

বিআইপিডি’র চেয়ারম্যান বলেন, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের বিষয়টি নিয়ে বিআইপিডি ২০১৯ সালের ১১ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর সর্বপ্রথম পত্র দেয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল পত্র পাঠানো হয়। এ যাবত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর এবং ফিন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস বিভাগ বরাবর ৩৬টি পত্র ও ইমেইল পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। জবাব না দেওয়ার কোনো কারণ আছে কি না আমরা তাও জানতে পারিনি।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর এবং ২০২৩ সালের ২ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড কর্তৃক বিআইপিডির অর্থ পরিশোধ না করার বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে পত্র দেওয়া হয়। এই পত্র দেওয়ার পরে ৮ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বা আমাদেরকে অবহিত করেনি।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি সরাসরি সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিএফআইএম’র ডিরেক্টর মো. আমির উদ্দিন উল্লেখ করেন যে, কোম্পানি ম্যাটার নং-২৪৩/২০২০ এর প্রেক্ষিতে মহামান্য আদালতের ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারির আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে রক্ষিত বিআইপিডির আমানত অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

বিআইপিডি’র চেয়ারম্যান বলেন, এ বক্তব্য আদৌ যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য নয়। উক্ত মামলাটি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এবং পিএফআই প্রোপারটিজ লিমিটেডের মধ্যে সংগঠিত হয়েছে। এই মামলার সঙ্গে বিআইপিডি কোনোভাবে জড়িত নয়। আদালতের আদেশে বিআইপিডির হিসাব ফ্রিজ করার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরিষ্কার করে বলার পরেও এ যাবত বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বা আমাদের কোনো জবাব দেয়নি।

তিনি জানান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ২০২২ সালের ২৩ মার্চ ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে বিআইপিডির প্রাপ্য অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে পত্র দেয়। ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এই নির্দেশনাও অমান্য করেছে।

এমএএস/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।