ডিএসই চেয়ারম্যান

তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৩৬ পিএম, ১৬ মে ২০২৪

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ছয়টি সেক্টরের ৪৮টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিবদের নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।

‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং এবং ডিসক্লোজারস: রেগুলেটরি রিকুয়ারমেন্টস’ শীর্ষক সেমিনারটি ডিএসই মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু’র সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম, বিশেষ অতিথি ডিএসই’র পরিচালক মো. আফজাল হোসেন। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিএসইসির প্রধান হিসাবরক্ষক এবং নির্বাহী পরিচালক কামরুল আনাম খান।

অনুষ্ঠানে আব্দুল হালিম বলেন, কমিশন অনেক সময় মনে করে, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আর্থিক প্রতিবেদন পরিপূর্ণভাবে প্রকাশিত হয় না বা অডিটররা যে রিপোর্ট তৈরি করেন তাতে অনেক কিছু গোপন থাকে।

তিনি বলেন, অন্য দেশের পুঁজিবাজার অর্থনীতিতে যে রকম অবদান রাখে আমরাও চাই আমাদের পুঁজিবাজার সে রকম অবদান রাখুক এবং সে ধরনের অবস্থায় যাক। কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা দেখি জিডিপিতে অবদান থাকলেও সেই ধরনের পর্যায়ে নেই। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাজারে যে কোম্পানিগুলো রয়েছে, তাদের সে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে চাই, যাতে যারা তালিকাভুক্ত হয়নি তারা যেন মনে করেন এখানে যে সুযোগ-সুবিধাগুলো রয়েছে তারা মিস করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এখানে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের যে ব্যবধান শুধু সেটা নয়, আরও যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। এখানে যেসব কোম্পানি রয়েছে তাদের তিন মাস, ছয় মাস এবং বছরে রিপোর্ট দিতে হয়। এতে করে আপনার যারা শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন তাদের প্রতি আপনারা বাস্তব তথ্য তুলে ধরেন। তাই এই ক্ষেত্রে অবশ্যই কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। সেটা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারেই কাজ করছি।

বিএসইসির কমিশনার বলেন, যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আমরা একটি উদাহরণ তৈরি করতে চাই, যাতে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বুঝতে পারে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। শুধু ট্যাক্স সুবিধা নয়, এর বাইরেও অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, আজকের সেমিনারের আলোচিত বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ডিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আর্থিক প্রতিবেদন সঠিকভাবে তৈরি ও প্রকাশের জন্য বিভিন্ন আইন-কানুন তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, কোম্পানির সিএফও ও কোম্পানি সচিব এগুলো বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বশীল। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ফিন্যান্সিয়াল ইস্যুতে স্বচ্ছতার অভাবে পুঁজিবাজার অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা আপনাদের আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন বিধিবিধান সম্পর্কে অধ্যয়ন না করার কারণে আর্থিক প্রতিবেদনে বিষয়গুলো সঠিকভাবে পরিপালন করা হচ্ছে না। কিন্তু কোম্পানির সচিব এবং সিএফও-দের উচিত বিধি-বিধানগুলো সঠিকভাবে পড়া এবং সেগুলো যথাযথ পালন করা।

বিএসইসির প্রধান হিসাবরক্ষক এবং নির্বাহী পরিচালক কামরুল আনাম খান বলেন, মূল প্রবন্ধে আর্থিক প্রতিবেদনে যে ৩৮টি ভুলের কথা বলা হয়েছে ভবিষ্যতে আপনারা এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য রাখবেন। সময়মতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে শুধু জরিমানাই হয় না, একইসঙ্গে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হয়। তাই কোম্পানির সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার জন্য সব আইনকানুন সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আর এক্ষেত্রে রেগুলেটরের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র করপোরেট গভর্ন্যান্স এবং ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান মো. মাসুদ খান৷ মূল প্রবন্ধে তিনি আর্থিক প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য, আর্থিক বিবরণী জমা দেওয়ার নিয়ম, প্রবিধান, বিজ্ঞপ্তি এবং সময়সীমা, আর্থিক বিবৃতিগুলোর প্রধান অসঙ্গতি ও নন কমপ্লায়েন্স এবং প্রশমনের উপায় নিয়ে আলোকপাত করেন।

এমএএস/জেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।