শিক্ষাক্রম-পাঠ্যবই নিয়ে ‘অপপ্রচার’, এবার মামলা করলো এনসিটিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

নতুন শিক্ষাক্রম ও ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের দুটি পাঠ্যবই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে মনে করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। কারা এ অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে মামলা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ২৩ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিল থানায় এ মামলা করা হয়।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব মোছা. নাজমা আখতার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘অপপ্রচার যারা চালাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমরা মামলা করেছি। আমরা কারও নাম উল্লেখ করিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুঁজে বের করবেন, কারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

আরও পড়ুন: পাঠ্যবইয়ের ‘ত্রুটি’ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, শাস্তির মুখে শিক্ষক

নাজমা আখতার বলেন, ‘আমাদের নতুন বই এখনো ছাপার কাজই শেষ হয়নি। বিতরণ হতে অনেক দেরি। এরমধ্যে অনেকে নতুন বছরের বই বলে ফেসবুকে ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে উসকানি দিয়ে তাদের আন্দোলনে নামাচ্ছেন। নতুন শিক্ষাক্রমের আগামী বছরের বই এখনো প্রকাশই তো হয়নি। অথচ তারা সেই বই বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন। কীসের ভিত্তিতে তারা এটা করছেন? তারা নতুন বই পেলেন কোথায়?’

জানতে চাইলে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘উনারা (এনসিটিবি কর্মকর্তারা) একটা অভিযোগ দিয়েছেন। গুজব ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত সোশ্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

এদিকে, নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় বিদ্যুৎ কুমার রায় নামে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। আগামী তিনদিনের মধ্যে তাকে লিখিতভাবে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: রাজনৈতিক বিরোধিতায় পাঠ্যপুস্তকের সমালোচনা চলছে: শিক্ষামন্ত্রী

এছাড়া গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা অঞ্চলের ১১ জেলার ৪৫৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ও মাউশির মহাপরিচালক। সেখানে মন্ত্রী শিক্ষাক্রম ও বই নিয়ে অপপ্রচার রুখতে শিক্ষকদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকরা মন্ত্রীকে জানান, যারা মানববন্ধন করছেন, তারা প্রকৃত অভিভাবক নন। বিভিন্ন কোচিং ও গাইড ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িতরা উসকানি দিয়ে অভিভাবকদের আন্দোলনে নামাচ্ছেন।

এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাব, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল শাখার সামনে, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে শিক্ষাক্রম সংশোধন ও পরীক্ষা পদ্ধতি বহালের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা। ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন অভিভাবক ফোরাম’ ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই নিয়ে আপত্তি তুলে ধরেন তারা।

রাজধানী ঢাকার বাইরেও বরিশাল, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে একই ফোরামের ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে। এছাড়া আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে এ ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ফোরাম।

আরও পড়ুন: এবার পৌনে ৩ কোটি বই কম ছাপছে এনসিটিবি

এএএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।