আইডিইবি সভাপতি

পলিটেকনিকে শিক্ষক নিয়োগের চেয়ে ভবন বানাতে ব্যস্ত মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২২ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০২৩

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের চেয়ে বড় বড় ভবন বানাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেশি ব্যস্ত বলে মন্তব্য করেছেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) সভাপতি এ কে এম হামিদ।

তিনি বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষার মান বাড়াতে দরকার মানসম্মত শিক্ষক। শিক্ষানীতি-২০১০ এ বলা আছে, কারিগরিতে প্রতি ১২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো— আছে মাত্র ১৮ শতাংশ শিক্ষক। বাকি ৮২ শতাংশ শিক্ষকের পদ ফাঁকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষক নিয়োগের চেয়ে বিল্ডিং বানাতে বেশি ব্যস্ত।’

রোববার (৫ নভেম্বর) আইডিইবি ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন এ কে এম এ হামিদ। আগামী ৮ নভেম্বর আইডিইবির ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এ কে এম এ হামিদ বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন হলো— পলিটেকনিক্যাল একটি প্রতিষ্ঠান চালুর আগেই কেন বিন্ডিং বানাতে হবে? আগে শিক্ষক নিয়োগ দেন। গবেষণার জন্য ল্যাবরেটরির সামগ্রী দেন। তারপর যত খুশি বিল্ডিং বানান।’

প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে কারিগরি শিক্ষা এমন অভিযোগ দেশের ৫ লাখ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সংগঠন ইনস্টিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি)। সংকট দূর করতে হলে চিকিৎসকদের মতো কারিগরিতে বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান তারা।

পলিটেকনিকে শিক্ষক নিয়োগের চেয়ে ভবন বানাতে ব্যস্ত মন্ত্রণালয়

আইডিইবি সভাপতি বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল কারিগরি শিক্ষার ভর্তি হার ২০২০ সালের ২০ শতাংশ, ২০৩০ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালে ৫০ শতাংশে উন্নীত করবে। কিন্তু বাস্তবে ২০২০ সালের টার্গেট পূরণ হয়নি। সামনে টার্গেট কতটুকু পূরণ হবে, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। কারণ মানসম্মত শিক্ষার চেয়ে স্ট্রাকচারে (অবকাঠামো) বেশি মনোযোগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। শিক্ষিত বেকার তৈরি বন্ধ করতে হলে কারিগরি শিক্ষার প্রতি শুধু মনযোগ নয়, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।

তিনি বলেন, ৮২ শতাংশ শিক্ষক পদ ফাঁকা থাকারও পরও তা পূরণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছার যথেষ্ট ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার দিলেও তা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিন ঘরে পড়ে আছে। সরকারের কাছে দাবি জানাবো, করোনাভাইরাস মহামারি ও তার পর বিশেষ ব্যবস্থায় যেভাবে চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, কারিগরিতে একই পদ্ধতিতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। না হলে এ সেক্টর বিশ্ববাজার থেকে ছিটকে যাবে।

এদিকে, ৮ নভেম্বর আইডিইবির ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনের আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান জানান, জাতীয় টেকসই উন্নয়নে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গণমানুষের উদ্ভাবনী ধারণা ও উদ্যোক্তা বিকাশের বিষয়টি সামনে রেখে এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা নীতি’। এসময় গণপ্রকৌশল দিবস সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন শামসুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি এ কে এম আব্দুল মোতালেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কুদ্দুছ, মো. সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মুস্তাসীর হাফিজ, অর্থ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজাহান কবির প্রমুখ।

এএএইচ/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।