নর্থ সাউথের ভিসির দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪১ পিএম, ০৪ মার্চ ২০২৪

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে গাড়ি ও জমি কেনার সময় অর্থ জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে এর আগে তদন্ত করে দুদক। সেসব অভিযোগ থেকে বর্তমান উপাচার্য আতিকুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে পুনরায় তদন্ত চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদন বিবেচনায় নিয়ে ফের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

পুনরায় তদন্তের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আতিকুল ইসলাম বর্তমানে উপাচার্য এবং একইসঙ্গে ট্রাস্টি বোর্ডেরও সদস্য। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী উপাচার্য কোনোভাবেই ট্রাস্টি বোর্ডে থাকতে পারেন না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৩৫(৭) ধারা অনুযায়ী তার দুই পদে থাকা বেআইনি।

এতে আরও বলা হয়েছে, আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে ট্রাস্টিরা কোনো সুবিধা নিতে পারবেন না। কিন্তু উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে বেতন নেন। আচার্যের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি আবার ট্রাস্টিও। তিনি ট্রাস্টি বোর্ডের সব মিটিংয়ে উপস্থিত থাকেন। এর আগে যেসব দুর্নীতির অভিযোগে ট্রাস্টি বোর্ডের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়েছিল, সেসময় উপাচার্যও সম্পৃক্ত ছিলেন এবং সব মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের সময় উপস্থিত থেকে সম্মতি দিয়েছেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ১২টি গাড়ি কেনার সময় যে অর্থ জালিয়াতি হয়েছে, সেখানে তিনিও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়া ২০২২ সালে ট্রাস্টি বোর্ড সভার সম্মানি কমিয়ে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও বোর্ড সদস্যরা আগের মতো ৫০ হাজার টাকা সম্মানি নেন। আগে নর্থ সাউথের একজন ট্রাস্টির সুপারিশে পাঁচজন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ ছিল এবং একজন ট্রাস্টি তিনজন শিক্ষার্থীকে ফ্রি পড়াতে পারতেন।

২০২২ সালে নতুন ট্রাস্টি বোর্ড করার পরে সদস্যদের এ সুবিধাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে বেশিরভাগ সদস্য একমত হলেও পরবর্তী সময়ে আবারও শিক্ষার্থী ভর্তি ও শিক্ষার্থীকে বিনা খরচে পড়ানোর নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে।

এ নিয়ে জানতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরিচয় দিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

২০২২ সালের অক্টোবরে নর্থ সাউথের সাবেক ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অর্থপাচার মামলার চার্জশিট অনুমোদন দেয় দুদক। চার্জশিটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বা অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদন বা সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ অপরাধজনকভাবে প্রদান বা গ্রহণ করেছে।

এএএইচ/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।