শেষ বিকেলে ‘জমছে’ বইমেলা
সঙ্কট আর অপ্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবারের অমর একুশে বইমেলা। নানা শঙ্কার মধ্য দিয়ে বইমেলা শুরু হলেও মেলার সময় নির্ধারণ নিয়ে ছিল নানা জটিলতা। দেশে দ্বিতীয় দফা লকডাউন ঘোষণার পর সময় পরিবর্তন করায় দুপুর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গনে থাকে হাহাকার।
চৈত্রের দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পাঠকশূন্যই থাকছে বইমেলা। প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোতেও সুনসান নীরবতা। দর্শনার্থী না থাকায় অলস সময় কাটাতে হয় স্টল মালিক ও বিক্রয়কর্মীদের। বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় পাঠকদের ভিড়। এই এক ঘণ্টাতেই হয় কিছু বেচাকেনা।
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা এমন তথ্য জানিয়েছেন। প্রকাশকদের দাবি- মেলার সময় পরিবর্তন করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নির্ধারণ করা হোক।
জানা গেছে, শুরুর দিকে বইমেলা বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হলেও নতুন করে লকডাউনের ঘোষণার পর মেলার সময় পরিবর্তন করে তা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত করা হয়। ফলে দুপুর থেকে ৩টা পর্যন্ত মেলায় ক্রেতাদের কোনো আনাগোনা থাকে না। বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে একটু ভিড় হয়।
দ্যা ইউনিভার্সাল একাডেমির প্রকাশক শিহাব উদ্দীন বলেন, ‘করোনার মধ্যে মেলা হওয়ায় এবার আমরা শুরু থেকেই ক্ষতির মুখে পড়েছি। শুরুর দিকে মেলার সময় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত হওয়ায় মোটামুটি বেচাকেনা হচ্ছিল। এখন সেটাও হচ্ছে না। দুপুরে গরমের মধ্যে মানুষ মেলায় আসতে চান না।
তিনি আরও বলেন, ‘এই সময়টা অফিসের কারণেও আমরা অনেক পাঠক পাচ্ছি না। বিকেল ৩টা থেকে মানুষ আসতে শুরু করে। তখন কিছু বেচাকেনা হয়। আমরা চাই- আর যে ক’দিন মেলা চলবে সময়টা পরিবর্তন করে বিকেলে থেকে রাত পর্যন্ত করা হোক।’
সরকারি চাকুরিজীবী আব্দুল মুকুল মেলায় এসেছেন পরিবার নিয়ে। তিনি জানান, প্রতিদিন বিকেল পাঁচটায় মেলা বন্ধ হয়ে যায়। অফিস শেষে মেলায় আসার আর সময় থাকে না। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত মেলা হলে আমাদের মতো চাকুরিজীবীদের জন্য সুবিধা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আজ ছুটির দিন হওয়ায় পরিবার নিয়ে আসতে পেরেছি। অন্যান্য বারের মতো এবার মেলাও জমজমাট নয়। প্রতিবছর পাঠক-লেখকদের এক ধরনের মিলনমেলায় পরিণত হয় বইমেলা। এবার তার ছিটেফোঁটাও দেখছি না।’
জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ও সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ উদ্দীন জাগো নিউজ কে বলেন, ‘সরকার যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, আমরা তার বাইরে যেতে পারি না। এখন মেলা কমিটি যদি সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, তাহলে সে অনুযায়ী আমরা স্টল খোলা রাখতে পারব।’
রায়হান আহমেদ/এএএইচ/এএসএম