বিশ্ব সাপ দিবস

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনে রাখুন

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০২ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৫

সাপের জন্য আজকের দিনটি বরাদ্দ। আজ সাপ দিবস। আসলে সাপকে যতটা ভয়ংকর প্রাণী মনে করা হয়, সাপ ততটা ভয়ংকর নয়। বরং বলা যায় খানিকটা নিরীহ প্রাণী বটে। গোবেচারা চেহারার এই সাপেদের জন্যই ১৬ জুলাই দিনটি পালন করা হয় সাপ দিবস হিসেবে।

সাপকে মানুষ ভয় পায় বলেই এই সাপ নিয়ে আছে নানান ভীতিকর গল্প-কাহিনি। কোনো বন্ধু বিশ্বাসঘাতকতা করলেই তাকে ‘সাপ’ বলে সম্বোধন করি। এছাড়া সাপ সম্পর্কে আমাদের সমাজে আরও অনেক নেতিবাচক ধারণা প্রচলিত আছে। বিশ্বে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ প্রজাতির সাপ রয়েছে। সংখ্যাটা নেহাত কম নয়, তবে এর মধ্যে বিষধর সাপের সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা।

বিজ্ঞাপন

আসুন বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৫ সাপের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক-

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনে রাখুন

১. ইনল্যান্ড তাইপান
মরুভূমির মাঝখানে (কুইন্সল্যান্ড-দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল কান্ট্রি) বাস করা নিভৃতচারী এ সাপকে “ফিয়ার্স স্নেক”ও বলে। এর এলডি৫০ (এস.সি.) মাত্র ০.০২৫ মি.গ্র./কেজি। বর্তমান পর্যন্ত স্থলভাগের সবচেয়ে বিষধর সাপ। গড় লম্বা ১.৮ মিটার, গা বাদামি-হলুদ; শীতকালে গা গাঢ় হয় উষ্ণতা ধরে রাখতে। নিশাচর ইঁদুর-খেকো; মানুষ দেখে পালিয়ে যায়, তবে কোণে ঠেকলে একাধিকবার ছোবল দিতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনে রাখুন

২. ইস্টার্ন ব্রাউন স্নেক
অস্ট্রেলিয়ার কৃষিজ এলাকা, শহরতলি এমনকি ব্যাকইয়ার্ডেও মেলে এই সাপের। এর বিষের মাত্রা ০.০৫ মি.গ্র./কেজি হলেও এর কামড় খুবই বিপদজনক। এ সাপ দিনের বেলা সক্রিয় থাকে। এক ছোবলে নিউরোটক্সিন-সাপরো-কম্প্লেক্স থ্রোম্বিনের মতো করে রক্ত জমাট বাঁধায়; মৃত্যু ঘটতে পারে আধা ঘণ্টায়। প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়ায় সর্বাধিক মৃত্যুর জন্য দায়ী এই সাপ। এদের খাবার মূলত ইঁদুর ও ছোট পাখি।

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনে রাখুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩. কোস্টাল তাইপান
উষ্ণ উপকূলজ কুইন্সল্যান্ড-উত্তর নিউ সাউথ ওয়েলস ও পাপুয়া নিউ গিনিতে মেলে। ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা, মাথা লম্বাটে; লাফিয়ে ছোবল দিয়ে ১২০ মি.গ্র.-এরও বেশি বিষ ঢালতে পারে—নিউরোটক্সিন ও প্রোকোয়াগুল্যান্ট মিলিয়ে। ত্বরিত স্নায়বিক পক্ষাঘাতেই মৃত্যু ঝুঁকি; ১৯ দিনে পোষা তাইপানের বিষে এক শিশুর মৃত্যুকাহিনি চিকিৎসকদের শিক্ষানবিশ কেসস্টাডি হয়ে আছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনে রাখুন

৪. বেলচার্স সি-স্নেক
দেখে মনে হতে পারে কাপড়ের তৈরি কোনো খেলনা সাপ। কিন্তু না এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপের মধ্যে অন্যতম একটি। যদিও এর কামড়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা খুব কম। কারণ এদের বাস ইন্দো-প্যাসিফিক প্রবালপ্রাচীরে ৮০ মিটার গভীরে। পাতলা, ১ মিটার লম্বা, দেহে হলুদ-সাদা দাগ। প্রকৃতপক্ষে সমুদ্রের মধ্যে ডুবোইস সি-স্নেকের পরই বিষধর। তবে শান্ত; জালে জড়ালে তবেই কামড়ায়।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর ৬ সাপ চিনে রাখুন

৫. ডুবোইস সি-স্নেক
কোরাল সি, নিউ ক্যালেডোনিয়া ও অস্ট্রেলীয় গ্রেট-ব্যারিয়ার রিফে ৪০ মিটার পর্যন্ত গভীরে বাস করে। এর এলডি ৫০ মাত্র ০.০৪৪ মি.গ্র./কেজি। বর্তমানে পরিমাপকৃত সবচেয়ে বিষাক্ত সামুদ্রিক সাপ। খাদ্য মূলত ছোট মাছ ও গলদা চিংড়ি; দিবাভাগে গর্তে লুকিয়ে থাকে। ধরলে প্যাঁচিয়ে ধরে হাঁসফাঁস করায়, কামড় বিরল।

৬. কিং কোবরা
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ৩.৭ মিটার পর্যন্ত লম্বা বিশ্বের দীর্ঘতম বিষধর সাপ এটি। প্রতিবারে ৪০০-৬০০ মি.গ্র. পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে; নিউরোটক্সিন ছাড়াও বিরল β-কার্ডিওটক্সিন হৃদ্স্পন্দন ব্যাহত করে। অন্য সাপ খেয়ে বাঁচে; একমাত্র সাপ যে বাসা বানিয়ে ডিম পাহারা দেয়। কোবরা সাপ হলেও হুড অপেক্ষাকৃত সরু। মাটির ওপর থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ১.৫ মিটার দূর থেকেও ছোবল দেয়। একে আমাদের দেশে রাজ গোখরা এবং পদ্ম গোখরাও বলা হয়। এর ফণায় অন্য গোখরার মতো চশমার মতো বলয় থাকে না। শঙ্খচূড় বাংলাদেশ, ভুটান, বার্মা, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এসব দেশে বেশি দেখা যায়। এই সাপ ঘন জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকায় থাকতে পছন্দ করে।

বিজ্ঞাপন

কেএসকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।