শরিফের অন্যরকম সুর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ০৬:০৯ এএম, ৩০ জুলাই ২০১৭

গিটার কিংবা বাঁশি ছাড়া শুধু জিহ্বা দিয়ে গানের সুর তোলেন তিনি। ব্যাপারটা অবাক করার মতোই। নাম তার শরিফ হোসেন। পেশায় একজন রিকশাচালক। রিকশা চালানোর সময় তিনি জিহ্বা দিয়ে গানের সুর তোলেন। যাত্রীরাও উপভোগ করেন তার গান। তাই তো তাকে ‘গায়ক শরিফ’ নামে ডাকে সবাই।

শরিফ হোসেন কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার মৃত মো. আইয়ুব আলীর ছেলে। বর্তমানে পটুয়াখালী শহরের দুই নম্বর ডোনাভান স্কুলের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাস করেন। তার এই গানের জন্য রিকশায় যাত্রীদের চাপ থাকে বেশ।

সেদিন বিকেল ৫টা। পটুয়াখালী সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শরিফের রিকশা। ইতোমধ্যে দুই যাত্রী এসে বললো, ‘এই যে ভাই, শিস দিয়ে গান শোনাতে হবে কিন্তু।’ ‘চলেন’ বলে শরিফ মনের সুখে শিস দিয়ে গান গাইতে গাইতে চলে গেলেন। এর কিছুক্ষণ পর একই স্থানে আসেন শরিফ। সেখানে কথা হয় তার সঙ্গে।

Shoref

রিকশাচালক শরিফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ঠোঁট বাঁকা করে বাঁশি বাজাতে পারি না। আমার বাঁশি বাজানোর খুব ইচ্ছে ছিলো। ২০০৭ সাল থেকে আমি জিহ্বা দিয়ে বাঁশি বাজাই। আমার বাঁশি বাজানোর সময় শুধু কণ্ঠনালী নড়াচড়া করে। গানটা আমি ইশারায় গাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পটুয়াখালীতে প্রাণের চিয়ার আপ কনসার্টের স্টেজে প্রথম শিস বাজিয়ে গান করেছিলাম। গানের পর এফ এ সুমন সাহেব আমাকে পুরস্কার দিয়েছিল।’

Shoref

দেশাত্মবোধক, রোমান্টিক, হিন্দি, ভারতীয় বাংলাসহ অনেক গান গাইতে পারেন তিনি। শরিফ হোসেন বলেন, ‘যে একবার আমার রিকশায় ওঠে; সে আর অন্য রিক্শায় উঠতে চায় না। আর সবাই আমাকে ১০-২০ টাকা বেশিও দেয়।

প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে ৬-৭শ’ টাকা উপার্জন হয়। এরমধ্যে ২৫০ টাকা রিকশা বাবদ জমা দিতে হয়। পৃথিবীতে আপন বলতে তেমন কেউ নেই। ২০০৭ সালে বিয়ে করেছেন। তাদের একটি সন্তান আছে।

Shoref

শরিফের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০০৭ সালে প্রথম তার (শরিফ) সঙ্গে দেখা হয়। তিনি শিস দিয়ে গান গাইতে পারেন। আমি শিস শুনে তার প্রেমে পড়ি। তিনি আমার সঙ্গে সবসময় শিসের মাধ্যমে কথা বলেন। আমি দূরে গেলে তিনি শিস বাজালেই আমি চলে আসি।’

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।