কেবলই স্মৃতিময় অতীত!

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩২ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০২৩

মামুনূর রহমান হৃদয়

স্মার্ট হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিশ্ব। আমাদের দেশেও লেগেছে উন্নতির হাওয়া। বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার ও সহজলভ্যতা জীবনকে দিয়েছে আলাদা মাত্রা। দিয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি। মুঠোফোন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ব্যবহার মানুষকে করে তুলেছে আধুনিক। আধুনিকায়নের ফলে আমরা ভুলতে বসেছি স্মৃতিময় অতীতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র।

সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে স্মৃতিগুলো। এখন সন্ধ্যা নামতেই কেউ গ্রামে হারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে বসে না। চিঠিতে কথা আদান-প্রদান হয় না। মুরুব্বিদের দেখা যায় না রেডিও হাতে সকালের খবর শুনতে। কালের পরিক্রমায় এমন অনেক কিছু হারিয়েছে জীবন থেকে।

আরও পড়ুন: শিশুর মানসিক বিকাশে অভিভাবকের ভূমিকা 

চিঠি
‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও আঙ্গুলের মিহিন সেলাই’। কবি হেলাল হাফিজের কবিতায় চিঠি পাওয়ার আকুলতা স্পষ্ট। হারিয়ে যাওয়ার তালিকায় চিঠির নামই থাকবে শীর্ষে। চিঠি নিয়ে গান, কবিতা, উপন্যাস, চলচ্চিত্রও নির্মাণ হয়েছে। চিঠি আদান-প্রদানের মাধ্যমে গড়ে ওঠা মিষ্টি সম্পর্ক নিয়ে নির্মিত ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমাটি এখনো দর্শকের হৃদয়জুড়ে আছে। টেলিফোন আবিষ্কারের আগে চিঠিই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। মুঠোফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে চিঠি এখন অফিস-আদালতের কার্যক্রমেই সীমাবদ্ধ। এখন আর ডাকপিয়নের সাইকেলের টিংটিং শব্দ শোনা যায় না। হয় না চিঠির আদান-প্রদান।

হারিকেন
দেশজুড়ে বিদ্যুতের সহজলভ্যতায় একসময়ের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় যন্ত্র হারিকেন এখন অতীত। তবে এখনো কিছু প্রত্যন্ত গ্রামে হারিকেনের দেখা মেলে। একসময় সন্ধ্যা নামতেই হারিকেনের চিমনি মুছে কেরোসিন ঢেলে আঁধার দূর করার প্রস্তুতি চলত। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়লেই ঘরে ঘরে জ্বলে উঠতো হারিকেন। তখন পাহাড়ের বুক থেকে কোনো গ্রামের দিকে তাকালে মনে হতো মাটির বুকে হাজারও তারা। দেখা যেত হারিকেন জ্বেলে পুঁথিপাঠের আসর। বর্তমানে লোডশেডিং হলেও রয়েছে চার্জার লাইট, মোবাইল টর্চ, জেনারেটরের ব্যবহার। তাই হারিকেন হারিয়ে গেছে আমাদের জীবন থেকে।

আরও পড়ুন: দেশ এখন স্মার্ট হেলথ বাস্তবায়নের পথে 

বেতার
টেলিভিশন আসার আগে বেতার ছিল সংবাদ জানার এবং বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম। মুক্তিযুদ্ধের সময় সব সংবাদ বেতারের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতো। গ্রামের দোকানে, চায়ের আড্ডায় সকাল-সন্ধ্যা চলতো বেতার। মুরুব্বিরা সারাদিনের খবর শুনতেন বেতারে। কেউ কেউ পুরোনো দিনের গান বাজাতেন। একসময় টেলিভিশনের আবির্ভাব ঘটল। কমতে শুরু করল বেতারের চাহিদা। তবে আশার আলো বাঁচিয়ে রেখেছিল বিভিন্ন কমেডি শো, কুইজ প্রতিযোগিতা, ভূত এফএম, আরজেদের মজার সব অনুষ্ঠান। এখন স্মার্ট ফোনের ব্যবহার, ইউটিউব, ফেসবুকের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে রেডিও যন্ত্রটির বিক্রি এখন নেই বললেই চলে।

লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।