নিউরোসায়েন্সেস’র নতুন ভবন উদ্বোধন

নবনির্মিত ৮০টি হাসপাতাল ভবন ব্যবহারের অযোগ্য: বিশেষ সহকারী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস’র নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানসহ অন্যরা

জনবল ও বায়োমেডিকেল সাপোর্ট–সংকটের কারণে দেশজুড়ে নবনির্মিত প্রায় ৮০টি হাসপাতাল ভবন এখনো ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় আনা যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

এ বাস্তবতাকে সামনে এনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিনস)–এর প্রতিও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।

ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, নতুন ভবন নির্মাণই শেষ কথা নয়; সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, নিরবচ্ছিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা ও জনবল স্থাপন না হলে উন্নত অবকাঠামোও অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস’র ৫০০ শয্যার নতুন সম্প্রসারণ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত উচ্চমানের ভবনগুলোর বেশিরভাগই জনবল সংকট, অপারেশনাল ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণ দুর্বলতার কারণে বছরের পর বছর বন্ধ পড়ে আছে। এসব ভবনে উন্নত মানের মডুলার সিস্টেম থাকলেও প্রয়োজনীয় বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট না থাকায় সেগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

ডা. সায়েদুর রহমান সতর্ক করে বলেন, উন্নত চিকিৎসা ভবন চালানো শুধু সৌন্দর্য বা নির্মাণকৌশল দিয়ে হয় না—যদি বায়োমেডিকেল টিম ২৪/৭ ব্যাকএন্ড সাপোর্ট দিতে না পারে, তাহলে যন্ত্রপাতি কয়েক মাসেই অচল হয়ে যেতে পারে।

নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটের নতুন ভবনকে তিনি বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘বড় অর্জন’ বলে উল্লেখ করলেও শুধু সেবাদান প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ না থাকার পরামর্শ দেন। তার ভাষায়, নিনসকে দেশের নিউরোসায়েন্স খাতের ‘গার্ডিয়ান প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে—মানদণ্ড নির্ধারণ, প্রটোকল উন্নয়ন, গবেষণা এবং স্থানীয় নিউরোলজিক্যাল সমস্যা সমাধানের কেন্দ্র হিসেবে এগোতে হবে।

এবছর সরকার জেনেটিক কেয়ার ও ইমার্জেন্সি কেয়ারকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবারের মতো জেনেটিক মেডিসিন এবং ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু হচ্ছে—যা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আধুনিকায়নে বড় ভূমিকা রাখবে।

নতুন ভবনের নকশা ও নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি স্থাপত্য অধিদপ্তর এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বমানের অবকাঠামো নির্মাণে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এখন সক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে। তবে তিনি রক্ষণাবেক্ষণে সমন্বিত উদ্যোগের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে বলেন, যদি ব্যবস্থাপনা দুর্বল হয়, তাহলে নতুন ভবনও সেই ৮০টি ভবনের সারিতে চলে যেতে পারে।

আলোচনার শেষে তিনি নিনসকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিক সহায়তার আশ্বাস দেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভবনের কার্যকর ব্যবস্থাপনায় সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী গিয়াস উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।

এসইউজে/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।