ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় টিকাকেন্দ্রে মানুষের জটলা
দেশে একদিনে এক কোটি করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এদিন শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর ও নাম-ঠিকানা লিখে দেওয়া হচ্ছে টিকা। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ অথবা পাসপোর্ট লাগছে না। প্রয়োজন হচ্ছে না রেজিস্ট্রেশনের।
সকালে সরেজমিনে রাজধানীর একাধিক টিকা কেন্দ্রে দেখা গেছে, প্রতিটি কেন্দ্রে নারী-পুরুষ ও শিশুরা (১২ বছরের ঊর্ধ্বে) টিকা নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। তাদের কেউ কেউ নিবন্ধন করেছেন কিন্তু খুদে বার্তা পাননি, আবার কারো হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন রয়েছে। কিন্তু তারা টিকার জন্য নিবন্ধন করেননি, আবার কারো হাতে কিছুই নেই। তবে কেন্দ্রগুলোতে নারীর ভিড় বেশি দেখা গেছে। উৎসাহ-উদ্দীপনায় চলছে টিকা কার্যক্রম।
রাজধানীর আজিমপুর নতুন কবরস্থান সংলগ্ন সিটি করপোরেশনের অধীন একটি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, এখানে টিকা গ্রহণের জন্য দীর্ঘ লাইন।
শামসুল আলম নামে এক প্রবীণ জানান, তার পরিবারের সাই টিকা গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় তিনি টিকা নিতে পারেননি। তাই আজ এসেছেন।
এদিকে রাজধানীর নতুন পল্টন এলাকার আল হেরা জামে মসজিদ থেকে এলাকাবাসীকে বলা হয়, যারা প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করেননি, তাদের নিকটস্থ ইরাকি কবরস্থান সংলগ্ন ক্লাব কেন্দ্রে টিকা নিতে যাওয়ার জন্য।
এছাড়া জেলা সদর, উপজেলা, ইউনিয়ন, কমিউনিটি ক্লিনিক, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় টিকাদান কেন্দ্রে ছুটছেন মানুষ। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর ও নাম-ঠিকানা লিখে টিকা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মসজিদ থেকে টিকা গ্রহণের জন্য মাইকে নিকটস্থ কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
দেশের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃ, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক মো. শামসুল হক বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির আগ পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এদিন পর টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরপর দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ চলবে।
দেশে গত বছর ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান শুরু হয়। বর্তমানে দেশে এস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না ও জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে টিকা দেওয়ার সংখ্যা বেড়ে ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৮১ হাজার ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এমইউ/জেডএইচ/এমএস