টিকা নিতে শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সামলাতে হিমশিম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২২

রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি। ফাইজারের তৈরি বিশেষ করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। রাজধানীর টিকাকেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই শিশু ও তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এতে টিকাদান ব্যবস্থাপনায় কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে মহাখালী আব্দুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশেপাশের টিকাকেন্দ্রগুলো ঘুরে এ চিত্রই চোখে পড়ে।

সেসব কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অনেকটা হুড়োহুড়ি করেই কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন। শিশু স্কাউটের সদস্য ও শিক্ষকরা চেষ্টা করছেন কেন্দ্রের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। কেন্দ্রগুলোতে একজন মেডিকেল কর্মকর্তা ও দুজন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন। শিক্ষার্থী উপস্থিতি বেশি হওয়ায় তাদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অসহনীয় গরম আর প্রখর রোদে মানুষের জটলায় শিশুরা অসুস্থ হতে পারে, এমন আশঙ্কা অভিভাবকদের।

টিকা নিতে শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সামলাতে হিমশিম

মহাখালী আব্দুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীনা জান্নাতুল ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষার্থী আছে। আজ টিকা নিতে এসেছে প্রায় ৮০০ জন। এছাড়া আমাদের স্কুলে টিকাকেন্দ্র হবে, এটিও হঠাৎ করেই জানানো হয়েছে। দুটি ক্লাসরুম টিকাদানের জন্য প্রস্তুত করলেও একটি রুমেই সবাইকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এতে কিছুটা জটলা তৈরি হচ্ছে। শিক্ষকরা সুশৃঙ্খলভাবে শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রাফি জাগো নিউজকে জানান, আমাদের স্টাফ কম, কেন্দ্রে সেচ্ছাসেবী ও কর্মী কম। ক্যাডেটরাও শিশু। এতে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ শিশুর সঙ্গে দুজন করে অভিভাবক আসছেন। অভিভাবকদের কারণেও কেন্দ্রে বাড়তি জটলা মনে হচ্ছে।

টিকা নিতে শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সামলাতে হিমশিম

তিনি জানান, যদিও বলা হচ্ছে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আছে, তবে সবাই এখনো নিবন্ধন করেনি। টিকার নিবন্ধনের ভিত্তিতে দৈনিক গড়ে ৩০০ ডোজ টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রে ধারনার চেয়েও বেশি শিশু টিকা নিতে এসেছে। আমরা সবাইকে টিকা দিতে পারবো। সেজন্য অতিরিক্ত টিকার চাহিদা দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় বেশি লাগবে।

তিনি আরও জানান, আজ হয়তো ৩৫০ জনের মতো নিবন্ধিত শিশু টিকা পাবে। এছাড়া অনেকের নামের ক্ষেত্রেও ভুল আছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করতেও সময় লাগছে।

টিকা নিতে শিশুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সামলাতে হিমশিম

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর সবকিছু ঠিক থাকলে আগস্টের শেষ সপ্তাহে এ বয়সী শিশুদের দেশে গণহারে টিকাদান শুরু হতে পারে।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোরশেদ আলম জানান, ১১ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে পরীক্ষামূলক শিশুদের করোনা টিকা কার্যক্রম। এরপর সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় ২৫ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম রাউন্ডের টিকাদান চলবে। এর দুমাস পর টিকার দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু হবে।

৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রেবিশেষ ব্যবস্থায় তৈরি ফাইজারের টিকা ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনা থেকে সুরক্ষায় ফাইজারের আরও ১৫ লাখ ডোজ করোনা টিকা সম্প্রতি অনুদান হিসেবে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ফাইজারের টিকার ১৫ লাখ ২ হাজার ৪০০ ডোজ দেশে আসে গত ৩০ জুলাই।

গত এপ্রিলেই ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দেশে এ বয়সী প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ শিশু রয়েছে।

এএএম/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।