সুস্থ কিডনি, সুস্থ দেহ

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ০৯ মার্চ ২০২৩

ডা. সেলিনা আক্তার

আজ বিশ্ব কিডনি দিবস। কিডনি রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

কিডনি আমাদের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি আমাদের দেহের রক্ত পরিশোধনের মাধ্যমে শরীর থেকে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর বর্জ্য নিষ্কাশন করে। সেই সঙ্গে এটি আমাদের দেহের পানি, বিভিন্ন খনিজ লবণ এ অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করাও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিডনি ইরাইথ্রোপয়েটিন নামক হরমোন তৈরির মাধ্যমে রক্ত তৈরিতেও সাহায্য করে।

কিডনি রোগ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এর মধ্যে জটিলতম হলো কিডনি বিকল হওয়া। কিডনি সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদি বিকল হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি বিকল নিরাময়যোগ্য নয়। তাই এর চিকিৎসা সুদীর্ঘ ও ব্যয়বহুল।

আরও পড়ুন: অর্থাভাবে ডায়ালাইসিস নিতে পারেন না ৮০ শতাংশের বেশি কিডনি রোগী

কিডনি রোগকে নীরব ঘাতকও বলা হয়। কারণ কোনো সুনির্দিষ্ট উপসর্গ ছাড়াই একজন রোগী তার কিডনির অধিকাংশ কার্যকারিতা হারাতে পারে। তবে কিছু প্রাথমিক উপসর্গ আছে যেমন চোখের চারপাশে ও পায়ে পানি আসা, ক্ষুধামন্দা বা বমি বমি ভাব, কোমরের দুই পাশে ব্যথা, ক্লান্তি অনুভব করা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বিশেষ করে রাতের বেলায় প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া ও প্রস্রাব কমে যাওয়া, শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি হওয়া, তবে অ্যাডভান্সড স্টেজে রক্তশূন্যতা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এছাড়াও যারা কিডনি রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা ও যাদের পরিবারে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে তারা বছরে অন্তত একবার কিডনি পরীক্ষা করাবেন। আর যারা ইতোমধ্যেই কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা প্রতি দুই থেকে তিন মাস অন্তর কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন ও নির্দেশমতো চলবেন।

আরও পড়ুন: দেশে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত

সুস্থ জীবনের জন্য চাই সুস্থ কিডনি। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কিছু নিয়ম পালনের মাধ্যমে আমরা আমাদের কিডনি সুস্থ রাখতে পারি। যেমন সুষম খাদ্যগ্রহণ, তাজা শাকসবজি ও ফলমূল প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করা, ব্লাড সুগার পরিমাপ করা ও নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান, মদ্যপান ও তামাকজাতীয় পণ্য পরিহার করা, অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া, পরিমিত পানি পান করা।

একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের দৈনিক দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা যথেষ্ট। তবে যাদের বারবার ইউরিন ইনফেকশন ও কিডনিতে পাথর হয় তারা তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানি পান করবেন। পরিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ব্যথার ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করা। অভ্যাসগুলো বদলে ফেললে বদলাতে হবে না কিডনি। সুস্থ কিডনি সবার জন্য।

লেখক: অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট, নেফ্রোলজি।

বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।