জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট

ঢিমেতালে চলছে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা

আবদুল্লাহ আল মিরাজ
আবদুল্লাহ আল মিরাজ আবদুল্লাহ আল মিরাজ , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:১৪ এএম, ০৮ নভেম্বর ২০২৩

# হৃদরোগে প্রতিদিন ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়
# বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবার কথা অনেকের অজানা
# প্রচার-প্রচারণায় জোর দেওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের

 

হৃদরোগে প্রতিদিন দেশে চারশো মানুষের মৃত্যু হয়। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এসে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান একথা। কিন্তু সেই হাসপাতালের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বহু মানুষ।

দেশের সব সরকারি হাসপাতালগুলোতে আউটডরে সাধারণ মানুষদের সেবা দেওয়া হয় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করা, রোগীর চাপ কমানো ও অর্থ সাশ্রয়ে সব সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বৈকালিক সেবা চালু করে সরকার। কিন্তু কোথায়, কীভাবে, কখন গেলে সেই সেবা পাওয়া যাবে সে বিষয়গুলো অনেকেরই অজানা।

আরও পড়ুন> নিউরো সায়েন্সসহ আরও ১৩২ হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা শুরু

সরকারের উদ্যোগে হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানো যায় কম খরচেই। সরকারের নির্ধারিত ফি ৫০০ টাকায় একজন অধ্যাপককে রোগী দেখানো যায় আর সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও মেডিকেল অফিসারকে দেখাতে গেলে ২০০ টাকা লাগে। এ সেবা নিতে রোগীদের প্রতিদিন ৩টা থেকে ৬টার মধ্যে যেতে হয় মেডিকেলে।

গেলো ৭ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে বৈকালিক সেবা কার্যক্রম লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোগী আসে মাত্র ৪ জন। নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর আসেন একজন চিকিৎসক।

আরও পড়ুন> স্বাস্থ্যমন্ত্রী/ সরকারি হাসপাতালে প্রতি মাসে ৩৬ কোটিবার চিকিৎসা নেয় মানুষ

হাসপাতালটির বিভিন্ন সূত্র বলছে, বৈকালিক সেবায় রোগীর উপস্থিতি একেবারেই কম। রোগী ও তাদের স্বজনরা জানেই না হাসপাতালে বিকেলে রোগী দেখে। ৬ নভেম্বরও বৈকালিক সেবা নিয়েছেন মাত্র ২জন। অথচ এই হাসপাতালে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চালু আছে। এসব বিভাগ হলো কার্ডিওলজি, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি ও ভাসকুলার সার্জারি বিভাগ।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে বাবা রফিকুল ইসলামকে (৫৫) নিয়ে হাসপাতালে আসেন আল আমিন ইসলাম রাজু। সেদিন রাজুর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, হাসপাতালে এসে দালালের খপ্পরে পড়েন। পরে আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় জানতে পারেন এই হাসপাতালেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন। তিনি বলেন, এখানে যে বৈকালিক সেবা দেওয়া হয় সেটা জানাই ছিল না।

jagonews24

হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা জানান, প্রতিদিন চিকিৎসকদের একটি টিম রয়েছে বৈকালিক সেবা দেওয়ার জন্য। প্রতিদিন আলাদা আলাদা টিম বসে। তবে মানুষ এখনো জানে না আর রোগী কম থাকায় অনেক সময় চিকিৎসকরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

আরও পড়ুন> নওগাঁয় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা/রোগী আসে না বলে চেম্বারে বসেন না চিকিৎসকরা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক অসাধারণ উদ্যোগ এটি। তিনি আরও জানান, সাধারণত সরকারি হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা থাকেন। বিকেলে আউটডোরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা থাকেন না। তবে ইনডোরের ক্ষেত্রে আমাদের সহকারী অধ্যাপকরা সেবা দিয়ে থাকেন।

ডা. প্রদীপ কুমার বলেন, এখনো বৈকালিক সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা কম। আমার ধারণা রোগী বাড়বে। এজন্য প্রয়োজন প্রচার-প্রচারণা। অনেকে এই সার্ভিস সম্পর্কে জানে না। কীভাবে নিতে হয় সেটাও বুঝতে পারেন না। প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত করে যেমন সেন্ট্রাল এসি ও ওয়ান স্টপ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা গেলে রোগীর সংখ্যা বাড়বে।

এএএম/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।