বিএসএমএমইউতে বছরে তিন শতাধিক শিশু হৃদরোগীর সার্জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০০ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জটিল হৃদরোগ নিরাময়ের জন্য আমি যোগদানের আগে শিশু হৃদরোগ বিভাগে বছরে ১০০টি অপারেশন হতো। তবে এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে বছরে শিশুদের ৩৩০টির বেশি অপারেশন হচ্ছে।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিএসএমএমইউয়ে ‘ক্যাথ ল্যাব রিলেটেড ইন্টারভেনশন’ শীর্ষক মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসএমএমইউ’র সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে।

উপাচার্য বলেন, শিশু হৃদরোগের ইন্টারভেনশনে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা ছাড়া যেন আমাদের চিকিৎসকরা করতে পারেন সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। হৃদরোগের জটিল ও কঠিন চিকিৎসায় বিএসএমএমইউ’র সফলতা অনেক। এখন আর হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য রোগীদের দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ’র হদরোগের অনেক বেশি ইন্টারভেনশন হচ্ছে। আমাদের এখানে ১৬ হাজারের মতো কার্ডিয়াক ইন্টারভেনশন ও ১৬শ’র মতো পিসিআই সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বিএসএমএমইউতে এমন অনেক বিভাগ আছে যে অন্য বিভাগে কী কাজ হয় তা জানে না। এই সেন্ট্রাল সেমিনারের মাধ্যমে আমাদের একটি সুযোগ হয় এক বিভাগের কাজ অন্য বিভাগকে জানানোর। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে হেপাটোলোজি বিভাগে লিভার সিরোসিস, লিভার ফেইলর, লিভার ক্যানসারের ইন্টারভেনশন হয়। হেপাটোলোজি বিভাগে ন্যাসভ্যাকের মতো ওষুধের ট্রায়ালও হয়। স্ট্রোকের চিকিৎসায় আমরা এরই মধ্যে সফলতা পেয়েছি। স্ট্রোকের রোগীকে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে আমাদের এখানে আনলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়। এর প্রমাণ এরই মধ্যে আমরা পেয়েছি। আমাদের এখানে ডিএসএ, নিউরোলজিক্যাল ইন্টারভেনশন হয়।

সেমিনারে বিএসএমএমইউ’র শিশু হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. তারিকুল ইসলাম, হেপাটোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহাতাব স্বপ্নীল, নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ্ সবুজ, হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়সাল ইবনে কবির একটি করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও মানসিক রোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাতিমা জোহুরার সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে জানানো হয়, কার্ডিওলজি বিভাগে সব ধরনের করোনারি ইন্টারভেনশনসহ ডিভাইস ইমপ্ল্যান্টেশন এবং স্ট্রাকচারাল হার্ট ডিজিজের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রাইমারি পিসিআই’র মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ জরুরি জীবন রক্ষাকারী ইন্টারভেনশনও রয়েছে। এই বিভাগেই যুগান্তকারী হাইব্রিড পেরিফেরাল ভাসকুলার ইন্টারভেনশন যেমন হয়েছে, তেমনি একই সঙ্গে দুটি ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গে (হার্ট ও পেরিফেরাল ভেসেল-এ) স্টেম সেল থেরাপি দেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বে প্রথম ঘটনা। এ দুটো কীর্তিই রচিত হয়েছে সহযোগী অধ্যাপক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. মো. রসুল আমিন, সহযোগী অধ্যাপক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. মোহাম্মাদ ফয়সাল ইবনে কবির ও সহযোগী অধ্যাপক ও ভাসকুলার সার্জন ডা. রকিবুল হাসানের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। ২০২৩ সালে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো ইন্টারভেনশন হয়েছে এই বিভাগে। কিছু যন্ত্রপাতির স্বল্পতা থাকা সত্ত্বেও এই বিভাগ দ্রুত সামনে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

এএএম/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।