প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই শেষ করেছি

আবদুল্লাহ আল মিরাজ
আবদুল্লাহ আল মিরাজ আবদুল্লাহ আল মিরাজ , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আবদুর রহমান ও জিনিয়া শারমিনের ঘরের প্রথম কন্যা তানজিম মুনতাকা সর্বা। এবারের এমবিবিএস মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে সর্বার প্রথম স্থান অর্জন করার এমন অর্জনে আনন্দের বন্যা বইছে তাদের ঘরে। বিভিন্ন কোচিং সেন্টারসহ একের পর এক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শুভেচ্ছা নিয়ে আসছে অনেকে।

তানজিম মুনতাকা সর্বা সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। তিনি এইচএসসি পাস করেন রাজধানীর হলিক্রস কলেজ থেকে। এর আগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বসুন্ধরা) থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। জানিয়েছেন তার জীবনের সফলতার পেছনের কারিগরদের কথা। তার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক আবদুল্লাহ আল মিরাজের

জাগো নিউজ: আপনার মেডিকেলে ভর্তিতে দেশসেরা হওয়ার পেছনে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল?

তানজিম মুনতাকা সর্বা: প্রথমত মহান আল্লাহর রহমত ছিল, তার রহমত ছাড়া এত বড় অর্জন কখনো সম্ভব ছিল না। এরপর এ যাত্রায় সবসময় কাছে পেয়েছি আমার মা-বাবাকে। তারাই আমাকে মূল শক্তি জুগিয়েছে। এরপর স্কুলের শিক্ষক, তারা আমাকে খুবই স্নেহ করতেন। স্কুলে আমি ভালো রেজাল্ট করতাম, আর শিক্ষকরা বলতেন আমি ভালো কিছুই করবো। কলেজে উঠে তেমন একটা ভালো রেজাল্ট হয়নি। তবে কলেজে আমাদের এইচএসসির সিলেবাস আগেই শেষ করে দিয়েছিল। এতে করে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হয়। আমাকে সবাই সহযোগিতা করেছে, সবার দোয়াই ছিল আমার জন্য।

জাগো নিউজ: দৈনিক কত ঘণ্টা পড়াশোনা করেছেন?

তানজিম মুনতাকা সর্বা: আমার আসলে এমন ধরা-বাধা সময় নির্ধারণ করা ছিল না, যে ১৬ ঘণ্টা বা ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করবো। কিন্তু প্রতিদিন আমার একটা লক্ষ্য থাকতো আমি এই এই পড়া গুলো শেষ করবো। কখনো যতটুকু পড়া শেষ করতে চেয়েছি তা কাভার হতো, কখনো হতো না। তবে এই চেষ্টাটুকু করতাম।

আরও পড়ুন

জাগো নিউজ: ভবিষ্যতে কোন বিভাগের চিকিৎসক হতে চান?

তানজিম মুনতাকা সর্বা: কার্ডিওলজিস্ট হওয়ার ইচ্ছা আছে। দেশে হৃদরোগের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন। তবে এ হৃদরোগের সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই আমার ফোকাস এদিকে থাকবে। তবে এখনো শিউর না পুরোপুরি একেবারে ফিক্সড করিনি। পড়াশোনা করতে থাকি, আরও ভালোভাবে বুঝেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

jagonews24

জাগো নিউজ: অনুজদের প্রতি আপনার পরামর্শ আছে কি না?

তানজিম মুনতাকা সর্বা: আমি যদিও অনেক বেশি অভিজ্ঞ না। তবে অনুজদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে যেনো তারা রেগুলারিটি রাখে পড়াশোনায়। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেগুলারিটি মেনে না চললে পড়াশোনায় গ্যাপ হয়ে যায়, এতে করে এই গ্যাপটা পুরনে অনেক কষ্ট হয়। কখনো পড়তে ইচ্ছা না করলে একটু মনকে কিছুক্ষণের জন্য সতেজ করে এরপর বসতে হবে। তবে পড়া থেকে গ্যাপ করা যাবে না। আর একটি সঠিক গাইডলাইন ফলো করতে হবে।

জাগো নিউজ: প্রাতিষ্ঠানিক পড়ার পাশাপাশি কোন বিষয়গুলো আপনাকে সহযোগিতা করেছে?

তানজিম মুনতাকা সর্বা: আমার কাছে মনে হয়েছে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য অনেক বেশি মডেল টেস্ট দেওয়া প্রয়োজন। আমি অনেক বেশি পরীক্ষা দিতাম। আমি পরীক্ষা মিস দিতাম না, সবসময়ই উপস্থিত থাকতাম। বিভিন্ন জায়গায়ই পরীক্ষা দিয়েছি। এর ফলে প্রশ্নপত্রের ধরণ সম্পর্কে আমার ধারণা আসে। এছাড়া আমার বাসায় হোম টিউটর ছিল। তাদের থেকে আমি সবসময় গাইডলাইন পেতাম। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অনেক বেশি পড়া, তাই একটা গাইডলাইন প্রয়োজন হয়।

মেয়ের এত ভালো ফলাফলে সর্বার বাবার অনুভূতি জানতে চাইলে আবদুর রহমান বলেন, আমার তিন ছেলেমেয়ে। বড় মেয়ে সর্বা ভর্তি পরীক্ষায় অনেক ভালো করেছে। এর জন্য শুকরিয়া আল্লাহর কাছে। কৃতজ্ঞতা জানাই তার শিক্ষকদের ওপরও। আমার মেয়ের নিজ থেকেই পড়াশোনার প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল। সে তার সাব্জেক্টিভ বিষয়ের পাশাপাশি অনেক বই পড়ার চেষ্টা করে। বইমেলার সময় আসলেই কখন নিয়ে যাবো এ জন্য তাগাদা করে। আমরা সমসময় মেয়েকে সাফোর্ট করেছি। কিছু গাইডলাইন দিয়েছি তবে এমন ভাবে কোনো চাপ দেওয়া হয়নি যে এত ভালো করতেই হবে। সে পরীক্ষা দিতো নিয়মিত। এতে তার ভালো ফলাফলে আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল। আমরা সবাই তার ওপর খুশি। 

এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।