ব্রেইন ডেড ব্যক্তির কিডনিতে সুস্থ তাহমিনা বাড়ি ফিরেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৩ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের মাধ্যমে কিডনি গ্রহীতা তাহমিনা ইয়াসমিন পপি (৪৬)। তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা। ক্লিনিক্যালি ডেড বা ব্রেইন ডেড রোগীর কিডনি নিয়ে অন্য রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করার পদ্ধতিকে বলা হয় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউ উপাচার্য ও জাতীয় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ তার কার্যালয়ে তাহমিনা ইয়াসমিন পপির হাতে ছাড়পত্র তুলে দেন।

ছাড়পত্র প্রদানকালে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের একটি আন্দোলন হওয়া উচিত। এটি করা গেলে অনেক মৃত্যুপথযাত্রী মানুষকে সহজেই বাঁচানো যাবে। ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দুটি সফলতা দেখিয়েছি।

তিনি বলেন, কৃতজ্ঞতা জানাই যে মহৎ মানুষ প্রয়াত কামরাঙ্গীচরের বাসিন্দা মো. মাসুম আলম ও তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার এবং তার পরিবারের প্রতি। যাদের ত্যাগের ফলে আজ এই তাহমিনা ইয়াসমিন পপি নতুন করে জীবন পেলেন। ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের সময় তাহমিনা ইয়াসমিন পপির সিরাম ক্রিটিনিন ছিল ৯। এখন ০.৯ নেমে এসেছে। তার মানে এই রোগী পুরোপুরি সুস্থ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, বিএসএমএমইউ সারাহ্ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেলের আহ্বায়ক রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রাসেল, ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেলের সদস্য সচিব ক্যাডাভেরিক কাউন্সিলর আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুজ্জামান সজীব, আবাসিক চিকিৎসক (আরপি) সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌফিক আহমেদ পিটু, উপ-রেজিস্ট্রার সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে ঢাকার কামরাঙ্গীচরের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী মো. মাসুম আলমের ‘ব্রেইন ডেথ’ হয়। অভিভাবকরা তার অঙ্গদানের সম্মতি দেন। ওদিন মাসুমের একটি কিডনি গ্রহণ করেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ৪৯ বছর বয়সী তাহমিনা ইয়াসমিন। এ কার্যক্রমের প্রধান সার্জন ছিলেন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল।

মাসুমের আরেকটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় ৪৪ বছর বয়সী জাকির হোসেনের শরীরে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজিতে (এনআইকেডিউ) তার শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।

দেশে প্রথমবারের মতো অঙ্গদান করেন সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছরের এক তরুণী। তাকে গত বছরের ১৮ জানুয়ারি রাতে ‘ব্রেইন ডেথ’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সারাহর শরীর থেকে কিডনি নিয়ে তা দুজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। সারাহর চোখের কর্নিয়াও দেওয়া হয় অপর দুজনকে। তারা ভালো আছেন।

এএএম/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।