স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৬ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে মন্তব্য করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ইয়ুথ কনফারেন্স ফর টোব্যাকো ফ্রি বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনে সভার আয়োজন করা হয়।

মো. মহিববুর রহমান বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। উন্নত দেশের নাগরিক হিসেবে, আজকের তরুণদের অবশ্যই স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। সেক্ষেত্রে তরুণদের অংশগ্রহণে তামাক ও মাদকবিরোধী প্রচারণাকে আরও জোরদার করতে হবে এবং নিজেদের দক্ষ এবং যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. আফতাব উদ্দিন সরকার এমপি বলেন, তামাক হচ্ছে ক্ষতিকর একটি ফসল। এর চাষ এবং ব্যবহার আমাদের জন্য ক্ষতিকর। তামাকসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকজাত দ্রব্য ব্যবহার করার ফলে আমাদের অসংখ্য মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। তামাকের ক্ষতি থেকে শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য তরুণদের কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ এমপি বলেন, তরুণরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তামাক পণ্যে আকৃষ্ট হচ্ছে। ধূমপান মাদকাসক্তির প্রাথমিক ধাপ। তরুণদের রক্ষায় দ্রুত আইন করে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা জরুরি। তামাকের স্বাস্থ্যক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গণসচেতনতা এবং গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশকে বাঁচাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে ও সবাইকে সচেতন হতে হবে।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের তরুণ সমাজকে তামাকের ব্যবহার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যুগোপযোগী প্রয়োগের জন্য তরুণ সমাজকে উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের নিজেদের ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে এবং পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে অন্যকে রক্ষা করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যুক্ত হলেও দেশের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি তরুণ সমাজ নানাবিধ আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষতঃ তামাক সেবনের মাত্রা মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে। তরুণ সমাজের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা না গেলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে তরুণ শিক্ষার্থীদের সচেতন করা জরুরি। এক্ষেত্রে দেশের নীতি নির্ধারকসহ সবাইকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

তামাকের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আলোচনায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়ক ইফতেখার মুহসিন তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতি তুলে ধরে বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৬৭ শতাংশ মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগে। তামাকজাত দ্রব্য এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ। তাই জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে তরুণ সমাজ ও শিশু-কিশোরদের রক্ষা এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের গুরুত্ব অপরিসীম।

এছাড়া সভা শেষে জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত অ্যান্টি টোব্যাকো ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে তরুণ সমাজের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরেন অংশগ্রহণকারীরা। একই সঙ্গে তারা অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং জনসচেতনতা তৈরি করতে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

এএএম/এমআরএম/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।