শিশু হাসপাতালে এক নারীকে মারধর আনসার সদস্যের

আবদুল্লাহ আল মিরাজ
আবদুল্লাহ আল মিরাজ আবদুল্লাহ আল মিরাজ , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৪ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
অভিযুক্ত মো. সোহানুর রহমান

রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে এক আনসার সদস্য কর্তৃক মারধরের শিকার হয়েছেন এক নারী। বোনের সন্তানকে (ভাগনে) নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে এসেছিলেন ওই নারী। অভিযুক্ত আনসার সদস্যের নাম মো. সোহানুর রহমান।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের আউটডোরের সামনে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার ওই নারী বেসরকারি একটি নার্সিং প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন।

ঘটনার সময় হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন এই প্রতিবেদক। সরেজমিনে দেখা যায়, ভুক্তভোগী নারীর ডান গাল ফুলে আছে। মারধরের পর ওই নারীর গলা চেপে ধরে টেনেহিঁচড়ে হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় অভিযুক্ত আনসার সদস্যকে।

প্রত্যক্ষদর্শী রেবিনা খান বলেন, আমি তখন আমার বাচ্চাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেসময় দেখি ভুক্তভোগী নারী তার রোগীকে নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকতে চাচ্ছেন। তবে নার্স বাধা দিয়ে বলেন একজনের বেশি যাওয়া যাবে না। রোগীর অবস্থা একটু ক্রিটিক্যাল জানিয়ে ভুক্তভোগী নারী চেম্বারে ঢুকতে চান। এসময় আনসার সদস্য তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তখন ভুক্তভোগী নারী ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার সদস্যের সঙ্গে তর্কে জড়ান ও তার কলার ধরেন। এরপর ওই আনসার সদস্য ভুক্তভোগী নারীকে উপর্যুপরি থাপ্পড় দেন।

ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, চর্ম রোগে কষ্ট পাচ্ছিল আমার ভাগনে। ওর মা অনেক বেশি চিন্তিত থাকায় আমাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। তাকে নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকতে গেলে আনসার সদস্য বাধা দেন। এক পর্যায়ে আমাকে ধাক্কা দেন। এরপর আমি তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে কলার ধরলে তিনি আমাকে এলোপাতাড়ি থাপ্পড় দেন। এতে আমার চোখ ও চোখের নিচে ফুলে গেছে।

তিনি বলেন, আমাকে মারধর করেও ক্ষান্ত হননি ওই আনসার সদস্য। আমাকে আনসার ক্যাম্পের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। পরে এক নারী এগিয়ে আসলে আমাকে ছেড়ে দেন। এরপর আমার ব্যাগ থেকে দুটো অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়ে যান। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। মামলাও করবো।

হাসপাতালের আউটডোরে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক জানান, আনসার সদস্যের এমন কাজ করার এখতিয়ার নেই। রোগীর স্বজনরা সাধারণত অনেক বেশি দুশ্চিন্তায় থাকেন। তার ওপর শিশুকে নিয়ে এসেছেন।

এদিকে, হাসপাতালের পরিচালকের অনুপস্থিতিতে ভুক্তভোগীর অভিযোগ গ্রহণ করেন শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. রিয়াজ মোবারক। এসময় তিনি অভিযুক্ত আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, কোনো রোগীর স্বজনের গায়ে হাত তোলা নার্সের বা আনসারের কাজ না।

এদিকে, ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ দেওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই আনসার সদস্যকে ডেকে ঘটনার কারণ জানতে চায়। তবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এএএম/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।