সেমিনারে বক্তারা

আইন সংশোধন ছাড়া তামাকে অকালমৃত্যু রোধ সম্ভব নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২২ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
তামাক নিয়ন্ত্রণে সেমিনারের আয়োজন করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল

রোগে প্রতিবছর দেশে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু প্রতিরোধে প্রয়োজন বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন। কারণ, যত দিন যাবে তামাকজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা তত বাড়তে থাকবে।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হলরুমে আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের ভূমিকা: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আব্দুল আউয়াল রিজভী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা. ইউনুছুর রহমান।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় পৌনে ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।

সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যানসার, বক্ষব্যাধি এবং অন্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় দ্রুত বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে। তা না হলে তামাকজনিত এই অকালমৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব হবে না।

সেমিনারে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহা. শেখ শহীদ উল্লাহ বলেন, বিএমএ সাধারণত চিকিৎসকদের নিয়ে কাজ করলেও জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই তামাকের ভয়াবহতা থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিএমএ। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের একযোগে কাজ করতে হবে।

আইন সংশোধন ছাড়া তামাকে অকালমৃত্যু রোধ সম্ভব নয়

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। তারা রোগীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও তামাক ব্যবহার ছেড়ে দিতে উৎসাহিত করতে পারেন। তাহলে তামাক ব্যবহারে জনসাধারণ নিরুৎসাহিত হবে।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক ড. মাহিন মালিক বলেন, দেশের চিকিৎসকরা তামাক নিয়ন্ত্রণে সমাজে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারেন তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারণে যেভাবে প্রভাব ফেলছে তা অতুলনীয়।

সেমিনারের সমাপনী বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ'র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, তামাক দেহের সব অঙ্গ-প্রতঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেটা আমরা চিকিৎসক হিসেবে এবং আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ব্যাপকভাবে বুঝতে পারছি। এজন্যই আমার দেশের তরুণ চিকিৎসকদের নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি।

সেমিনারে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের নেতৃত্ববৃন্দ, প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এএএম/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।