স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ
বাংলাদেশে সরকারি সুবিধা জনসংখ্যার চাহিদা অনুযায়ী বণ্টন করা হয়নি। সবচেয়ে ধনী ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ধনী ২১ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া দেশের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ সর্বাধিক দরিদ্র এবং ২০ দশমিক ১ শতাংশ জনগণ দরিদ্র। দেশের দরিদ্রতম ২০ শতাংশ পরিবার মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধার ২০ শতাংশও ভোগ করতে পারে না।
রোববার ( ১৯ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে আয়োজিত সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অধিকার প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের অবস্থানপত্র শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া হয়। এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্সের কনভেনর আব্দুল আউয়াল লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কোভিডের আগের ধারাবাহিকতায় বাজেটে স্বাস্থ্য খাত অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। মহামারির সময়ই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছিল। কিন্তু এরপরও বাজেটে এ খাত প্রত্যাশিত মনোযোগ পাচ্ছে না। টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও বাজেট এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় এ দুই খাতে বরাদ্দ খুব একটা বাড়ছে না। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় করে, যা বৈশ্বিক গড় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে অনেক কম। সবার জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের সক্ষমতা তৈরির ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে নীতি সুপারিশ এবং করণীয় উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো:
>> স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য এবং বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য সেবায় অভিগম্যতা সম্প্রসারণের জন্য স্বাস্থ্যে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো অপরিহার্য।
>> স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে খরচ কমানো। বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ ভাগ নিজেকে ব্যয় করতে হয়। এটি অনেক পরিবারের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক সমস্যা। এ কারণে প্রান্তিক মানুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা বিলম্বিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে অসুবিধাগ্রস্ত পরিবার টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। স্বাস্থ্য বিমা কর্মসূচির আওতা প্রসারিত করে এবং স্বাস্থ্যসেবা খরচের জন্য ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয় কমাতে হবে।
>> প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।
>> অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্থ্য সেবায় প্রান্তিক মানুষের অভিগম্যতা বৃদ্ধি করতে হবে।
>> স্বাস্থ্যের সামাজিক সূচকগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে।
এএএম/এমএইচআর/জেআইএম