দেশজুড়ে

মুরগি-সবজির দাম কমলেও মাছের বাজারে উত্তাপ

মুরগি-সবজির দাম কমলেও মাছের বাজারে উত্তাপ

ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বেশিরভাগ সবজির দাম। একইসঙ্গে কমেছে মুরগির দামও। তবে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছের বাজার। ঈদের পর মাছের সরবরাহ কম থাকায় কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। এটিকে অযৌক্তিক দাম বাড়ানো বলে মনে করছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাছের পাশাপাশি দাম বেড়েছে টমেটো, গাজর, কাঁচামরিচ ও করলার। এছাড়া প্রায় সব সবজিসহ মুরগির দাম কমেছে। তবে কাচামরিচ, ধুন্দল ও মিষ্টি লাউ বিক্রি হচ্ছে স্থিতিশীল অবস্থায়।

ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহে শসা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে এখন শসা কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিচিঙ্গা ৫০ টাকা থেকে কমে ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা থেকে কমে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০, ঝিঙা ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০, বরবটি ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০, সজনে ৯০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৮০, ঢেঁড়স ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০ ও লতা ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

কেজিতে গাজরের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। গত সপ্তাহ গাজর ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৮০, টমেটো ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ১০ টাকা কমে ৪০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। স্থিতিশীল অবস্থায় ধুন্দল ৫০,কাঁচামরিচ ৬০, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা কেজিতে, মিস্টি লাউ ২০ টাকা পিস ও লেবু ৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

এদিকে একই বাজারে প্রকার ভেদে কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মাছের দাম। গত সপ্তাহে মৃগেল ১৮০-২৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে এখন মৃগেল ২২০-২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া রুই ও কাতল ২৫০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২৮০-৩৫০, সিলভার কার্প ১৭০-২৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০০-২৭০ ও বাউশ ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৪০-৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও শিং ২৮০-৬০০, পাবদা ৩৩০-৩৯০, শোল ৫৪০-৮৩০, ট্যাংরা ৪৯০-৭৯০, গুলশা ৩৬০-৯৭০, টাকি ৩৫০-৫৪০, তেলাপিয়া ১৯০-২৫০, পাঙাশ ১৭০-২০০ ও কৈ ২৩০-৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৫০ ও সোনালি ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া স্থিতিশীল অবস্থায় সাদা কক ২৭০ টাকা কেজিতে, ফার্মের মুরগির ডিম ৪৫ হালি ও হাঁসের ডিম ৬০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ঘুরে দেখা মেলেনি গরু ও খাসির মাংস।

ব্যাগ হাতে নিয়ে ঘুরে ঘুরে সবজি কিনছিলেন আব্দুল মতিন। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কয়েকদিনের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। এতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে দাম আরও কমানো প্রয়োজন।

Advertisement

মাছ কিনে বাজার থেকে চলে যাচ্ছিলেন মামুনুর রশীদ। এসময় কথা হলে তিনি বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ কম। এজন্য বিক্রেতারা মাছের দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা ক্ষুব্ধ। তবুও বাধ্য হয়ে বাড়তি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা আজিজ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় ক্রেতা কম। ফলে সব ধরনের সবজি দ্রুত বিক্রি করতে বিক্রেতারা দাম কমিয়েছেন।

মাছের সরবরাহ কমের পাশাপাশি ক্রেতাও কম উল্লেখ করে মাছ বিক্রেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে বেশিরভাগ মৎস্য খামার থেকে মাছ তোলা হচ্ছে না। ফলে বাজারে মাছের সরবরাহ একেবারেই কম। ক্রেতার সংখ্যাও গুটিকয়েক। ফলে বেশিরভাগ মাছের দাম বেড়েছে। তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে মাছের সরবরাহ বেড়ে দাম কমার সম্ভবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ঈদের আগে বাজারে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছিল। ঈদের পরও বাজারে মনিটরিং চলমান রয়েছে। সবকিছু ন্যায্য দামে বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় অভিযান চালিয়ে বিক্রেতাদের জরিমানার আওতায় আনা হবে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএন/জিকেএস