১১-২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের জন্য নবম পে-কমিশন গঠন করে বেতন-ভাতার অসংগতি দূর করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে খোলা চিঠি লিখেছেন সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক আব্দুল মালেক।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) তিনি এ খোলা চিঠি লেখেন। চিঠিটি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিগোচরে দিতে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে সমন্বয়ক আব্দুল মালেক লেখেন, আমরা ১১-২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা গত সরকারের আমলের নানা বঞ্চনার শিকার হয়েছি। ২০১৫ সালের আগের ১৫ বছরে তিনটি টাইম স্কেল ও একটা সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে ১৬ বছরে দুটি উচ্চতর স্কেল চালু করে পে-স্কেল প্রথা বাতিল করা হয়। গেজেটে বলা ছিল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে বেতন সমন্বয় করবে। কিন্তু ৯ বছরেও তা করা হয়নি।
‘গত ১০টি বছরে কর্মচারীদের এক টাকাও বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি। এমনকি অনেকেই বেতন গ্রেডের শেষ ধাপে পৌঁছার কারণে তাদর বার্ষিক ইনক্রিমেন্টও হচ্ছে না। অথচ দ্রব্যমূল্য বেড়ে আকাশচুম্বী। পে-স্কেল না হলে এ বেতন ধাপের সংস্কার সম্ভব নয়।’
Advertisement
তিনি আরও লেখেন, ‘৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আপনার আগমনে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবী খুশি হয়েছিলেন এ কারণে যে, এবার কর্মচারীদের কষ্ট ও বৈষম্য দূর হবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা আজও পূরণ হয়নি।’
‘আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্মচারীরা দাবি-দাওয়াগুলো স্মারকলিপি আকারে, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আপনার সাক্ষাতের জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। কত মানুষই আপনার সাক্ষাৎ পায়। আমরা সরকারি কর্মচারীরা রাষ্ট্রের উন্নয়নে নিয়মশৃঙ্খলা মেনে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কি আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) সাক্ষাৎ পেতে পারি না। আমরা আপনার সাক্ষাৎ চাই।’
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে একটা মহার্ঘ ভাতার কমিটি গঠিত হলো। তখন কর্মচারীরা আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টা তা নাকচ করে দিলেন। তিনিই আবার ২০ মে মিডিয়ার সামনে মহার্ঘ ভাতার কথা স্পষ্ট করেন। কর্মচারীরা আবারও আশার আলো দেখে।’
‘কিন্তু গত ২ জুন বাজেট ঘোষণায় এলো বিশেষ সুবিধার কথা। ৩ জুন প্রজ্ঞাপন হলো। যেখানে বলা হলো ১০-২০তম গ্রেডের সবাই ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পাবেন, যেখানে আগের ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধায় সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা সবাই পেয়ে আসছিলেন। ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধায় ৮২৫০ টাকার ১৫ শতাংশে বাড়ে ১২৩৭ টাকা। অথচ বলা হয়েছে পাবে ১০০০ টাকা। এ ত্রুটিপূর্ণ প্রজ্ঞাপন নিয়ে নানামহলে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।’
Advertisement
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ চেয়ে ঐক্যপরিষদের সমন্বয়ক আব্দুল মালেক লেখেন, ‘আমাদের বেতন-ভাতা বাড়ুক আর নাই বা বাড়ুক, আমরা আপনার সঙ্গে কর্মচারীদের মনের ব্যথাগুলো শেয়ার করতে চাই। একবার হলেও কর্মচারী প্রতিনিধিরা আপনার সাক্ষাৎ প্রার্থনা করছে।’
এএএইচ/এমএএইচ/জেআইএম