জাগো জবস

জাদুশিল্পী হিসেবে রাজুর ক্যারিয়ার

জাদুশিল্পী হিসেবে রাজুর ক্যারিয়ার

রাজু বাংলাদেশের একজন জাদুশিল্পী। তিনি সাজেদুর রহমান রাজিব নামে পরিচিত। প্রচুর স্টেজ শো করলেও স্ট্রিট ম্যাজিক ও ক্লোজ-আপ ম্যাজিকের জন্য সুপরিচিত। তিনি ‘থিংক ইন ম্যাজিক’ নামে টিভি সিরিজ করেছেন। যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। জাদুর পাশাপাশি চিত্রশিল্পী, বাঁশিবাদক এবং লেখক হিসেবেও পরিচিত। তার বই ‘আমব্রেলা’ ২০২১ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়। তিনি ডেভিড ব্লেইন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে জাদুর জগতে প্রবেশ করেন। তার স্ট্রিট পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পছন্দ করেন। ক্যারিয়ারে এই পথচলার গল্প বলেছেন জাগো নিউজকে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সাকিব আহমেদ—

Advertisement

জাগো নিউজ: শৈশব সম্পর্কে কিছু বলুন—রাজু: আমি ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করি। শৈশবে শিশু মেলায় জাদু দেখে জাদুবিদ্যার প্রতি আগ্রহী হই। পরে অনেক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাদুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি।

জাগো নিউজ: জাদুশিল্পী হওয়ার আগ্রহ কীভাবে হলো? রাজু: আমার জাদুর প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। আমি যখন ছোট ছিলাম; তখন বিভিন্ন ম্যাজিক শো দেখতে অনেক ভালো লাগতো। প্রথমে এটা শুধু একটি শখ ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমি বুঝতে পারলাম, এটি আমার জন্য বিশেষ দক্ষতা হতে পারে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন ম্যাজিক কৌশল শিখতে শুরু করি এবং আমার এই আগ্রহ আরও গভীর হতে থাকে। আমি মনে করি, জাদু শুধু বিনোদন নয় বরং এটি মানুষের মনের মাধুর্য এবং সৃষ্টিশীলতা প্রকাশের অনন্য মাধ্যম।

জাগো নিউজ: দীর্ঘ বিরতির পর আপনি ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’ সিরিজ নিয়ে ফিরছেন। এই নতুন সিরিজ সম্পর্কে কিছু বলবেন কি এবং এটি আপনার পূর্ববর্তী কাজের থেকে কীভাবে আলাদা?রাজু: হ্যাঁ, প্রায় ছয় মাসের প্রস্তুতির পর আমি ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’ সিরিজ নিয়ে ফিরে এসেছি। সিরিজটি আমার আগের ‘রাজু: থিঙ্ক ইন ম্যাজিক’ সিরিজের থেকে একেবারে ভিন্ন। এটি একটি গবেষণার ফলস্বরূপ। যা আমার টিমের এক বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর তৈরি হয়েছে। সিরিজটি শুধু ম্যাজিকের ওপর নয় বরং ঢাকা শহরের বিভিন্ন দিক ও ম্যাজিকের মেলবন্ধন নিয়ে তৈরি।

Advertisement

জাগো নিউজ: ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’ সিরিজের শুটিং প্রক্রিয়া কেমন ছিল?রাজু: শুটিং হয়েছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন ঐতিহাসিক জায়গায়, যেমন- পুরান ঢাকা, সদরঘাট, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল, ওয়ারী, আফতাব নগর ইত্যাদি। এ সিরিজে ঢাকা শহরের সঙ্গে ম্যাজিকের সম্পর্ক একটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। প্রতিটি দৃশ্য এবং ম্যাজিকের ট্রিক্স শহরের বাস্তবতা ও ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে।

আরও পড়ুন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়বেন? সরকারি ব্যাংকে আইটি বিভাগে চাকরির প্রস্তুতি

জাগো নিউজ: নতুন সিরিজটি তৈরির ক্ষেত্রে কী কী চ্যালেঞ্জ ছিল?রাজু: এ সিরিজ তৈরি করতে আমাদের পুরো টিমের অনেক পরিশ্রম এবং একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজন ছিল। আমাদের ডিওপি (ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি) হৃদয় সরকার ছিলেন অসাধারণ। প্রযুক্তিগত পরামর্শক, ম্যাজিক কনসালটেন্টসহ সবাই ছিলেন অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রমী। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘উইচিং এন্টারটেইনমেন্ট’ আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো সুবিধা প্রদান করার চেষ্টা করেছে। সিরিজটি দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় করার জন্য কোনো ত্রুটি রাখেনি।

জাগো নিউজ: ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’ সিরিজের দর্শকরা কী প্রত্যাশা করতে পারেন?রাজু: দর্শকরা এই সিরিজ থেকে একটি সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা পাবে। এটি শুধু ম্যাজিকের শো নয় বরং ম্যাজিককে বাস্তবের সাথে একত্রিত করার একটি প্রচেষ্টা। সিরিজটি আমার আগের কাজের একটি পরবর্তী ধাপ, যা অনেক দিন ধরে আমার এবং আমার টিমের গবেষণার পর তৈরি হয়েছে।

জাগো নিউজ: ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’ কোথায় এবং কখন মুক্তি পাবে?রাজু: সিরিজটি খুব শিগগিরই দেশের একটি অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে। আমরা খুব উত্তেজিত এবং আশা করছি দর্শকরা এটি খুব উপভোগ করবেন।

Advertisement

জাগো নিউজ: জাদুবিদ্যা ক্যারিয়ার হিসেবে কেমন?রাজু: জাদুবিদ্যা খুবই চ্যালেঞ্জিং এবং সৃজনশীল ক্যারিয়ার হতে পারে। তবে এটি শুধু মজা এবং বিনোদনের জন্য নয়। জাদু শেখার মাধ্যমে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করা, দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করা এবং তাদের অবাক করা একটি বিশেষ দক্ষতা। শিল্পটি ক্যারিয়ার হিসেবে স্থায়ী হতে পারে। যদি আপনি এর মধ্যে নিয়মিত প্রচেষ্টা, নতুন কৌশল শেখা এবং নিজের শখকে পেশায় পরিণত করতে সক্ষম হন। তবে এটি একটি নির্দিষ্ট বাজার এবং দর্শক প্রয়োজন। তাই একে পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ধৈর্য ও একাগ্রতা প্রয়োজন।

জাগো নিউজ: তরুণ জাদুশিল্পীদের জন্য আপনার পরামর্শ—রাজু: নিয়মিত অনুশীলন এবং শেখার প্রতি একাগ্রতা। নিজের স্টাইল ও মৌলিকতা তৈরি করতে হবে। দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য সঠিক কৌশল প্রয়োগ করা। বিভিন্ন শিল্পের সাথে পরিচিত হয়ে পারফরম্যান্স শক্তিশালী করা। ম্যাজিকের বিভিন্ন শাখা শিখে দক্ষতা বৃদ্ধি করা। পারফরম্যান্সের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করা। সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে নিজের কাজ প্রচার করা।

এসইউ/এএসএম