বাবা কোয়ারেন্টাইনে, চীনে নিঃসঙ্গ প্রতিবন্ধী কিশোরের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৭ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

করোনাভাইরাসের উৎসস্থল চীনের উহান শহরের বাসিন্দা ১৭ বছরের কিশোর ইয়ান চেং। ইয়ান সেরিব্রাল পালসি নামের এক রোগে আক্রান্ত । মা নেই তার। বাবার পাশাপাশি দেখাশোনার জন্য একজন লোক ছিলেন। কিন্তু বাবাসহ ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টাইনে। নিঃসঙ্গ বাড়িতে একাকী ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

কোয়ারেন্টাইন থেকে ইয়ানের বাবা চীনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম উইবোতে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি ছেলের অবস্থা জানিয়ে বলেন, তার ছেলের দেখভালের কোনো মানুষ নেই বাড়িতে। দ্রুত তার সাহায্য প্রয়োজন। তবে ছেলেকে বাঁচাতে বাবার আকুতি কাজে লাগেনি। গত বুধবার বাড়ি থেকে কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মর্মস্পর্শী আহ্বান জানিয়ে উইবোতে ইয়ানের বাবার দেয়া ওই পোস্ট গোটা চীনে ব্যাপকহারে ভাইরাল হওয়ার পর স্থানীয় দুই সরকারি কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাদের একজন হলেন চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির স্থানীয় সেক্রেটারি এবং অপরজন হুয়াজিহায়ে শহরের মেয়র।

সেরিব্রাল পালসি নামের রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতো কিশোর ইয়ান চেং। তবে সেটা নিজে হুইল চেয়ার চালাতে পারতো না, অন্যদের সাহায্যের প্রয়োজন পড়তো তার। কথা বলা, শোনা কিংবা খাওয়া কোনোটাই করতে পারতো না। প্রতিবন্ধী এমন এক কিশোরের পক্ষে তাই একাকী বেঁচে থাকা ছিল খুব কষ্টকর।

ইয়ান চেংয়ের বাবা ইয়ান শিয়াওয়েন জ্বরে ভুগে গত ২২ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ভর্তির পাঁচদিন পর তার শরীরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। হাসপাতাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ‘করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক বাবার অসহায় ছেলের জন্য সাহায্যের আকুতি’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেন তিনি।

দুই কর্মকর্তাকে বহিস্কার করা প্রসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ‘স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি ও মেয়র তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।’ তবে তারা আরও জানিয়েছেন, ‘শারীরিকভাবে অক্ষম ওই কিশোরের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে এ নিয়ে।

এসএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।