নতুন আতঙ্ক, সংক্রমিত হওয়ার ২৭ দিন পর ধরা পড়ল করোনা
চীনের হুবেই প্রদেশের ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন। কিন্তু ২৭ দিন পর্যন্ত তার শরীরে এই ভাইরাসের কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি। শনিবার হুবেই প্রদেশ সরকার এ তথ্য জানিয়ে বলছে, এর মানে হলো ইনকিউবেশনের জন্য আগে ১৪ দিনের যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল; এখন তারচেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে।
ইনকিউবেশনের সময় বেড়ে যাওয়ায় প্রাদুর্ভাবের বিস্তার রোধের প্রচেষ্টা আরও জটিল হতে পারে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়। সেই সময় থেকে দেশটিতে প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা।
ভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র হুবেই প্রদেশ সরকারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জিয়াং নামে শনাক্ত ওই ব্যক্তি গত ২৪ জানুয়ারি উত্তর-পশ্চিম হুবেইয়ের শেননোংজিয়ায়ে গাড়ি চালিয়ে যান। সেখানে পৌঁছে তার বোনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন তিনি। তারপরই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সংক্রমিত হন তিনি। তার শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া যায় এর ২৭ দিন পর।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, শুধু চীনেই এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৩৪৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ২৮৮ জন। বিশ্বের ২৯টি দেশ ও চারটি অঞ্চলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪০ জন এবং মারা গেছেন ১৭ জন।
এদিকে, শনিবার চীনের সর্ব উত্তরের একটি শহরের অন্তত চারটি জেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আঞ্চলিক পরিবহন ও বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই শহরের চারটি জেলা আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
হেইলংজিয়াং প্রদেশের রাজধানী হারবিন শহরের পৌর সরকার বলছে, দাওলি, দাওওয়াই, ন্যাংগ্যাং ও জিয়াংফ্যাং জেলার সব বাসিন্দাদের সাময়িক আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এই প্রদেশের সঙ্গে প্রতিবেশি উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। শহরগুলোতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এক কোটি নাগরিক অধ্যুষিত চীনের উত্তরাঞ্চলের এই প্রদেশ বৃহত্তম অর্থনীতি ও প্রধান প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রের জন্য পরিচিত। শস্য উৎপাদন, টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, খাদ্য, বিমান, গাড়ি ও ধাতব শিল্পের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় এই প্রদেশকে।
হারবিনে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে ৪৭৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২৪ জনই অবরুদ্ধ ওই চার জেলার বাসিন্দা। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কর্তৃপক্ষের যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে প্রাদুর্ভাব গুরুতর আকার ধারণ করছে।
এসআইএস/জেআইএম