করোনা থেকে বাঁচতে মদ্যপান, ইরানে প্রাণ গেল ৪৪ জনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ১১ মার্চ ২০২০

মদ্যপান করলেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচা যাবে; এমন গুজবে কান দিয়ে মদ্যপান করে ইরানে ৪৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দ্রুত বিস্তার ঘটতে থাকা করোনার সংক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচাতে আড়াই শতাধিক মানুষ স্থানীয় এক ধরনের মদপান করেছিলেন। গুজবের বশে মদ্যপান করে তাদের মধ্যে ৪৪ জন মূল্য দিলেন জীবনের বিনিময়ে।

বুধবার পর্যন্ত ইরানে অন্তত ৩৫৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯। এছাড়া দেশটিতে এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে আরও ৮ হাজার ৪২ জন।

করোনা থেকে মুক্তির গুজবে মদ্যপানে সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটেছে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুজেস্তান প্রদেশে। মদ্যপানে এ প্রদেশে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির সরকারি একটি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল বলছে, স্থানীয়ভাবে তৈরি একধরনের মদ্যপান করলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটাতে পারবে না। এমনকি ওই মদ্যপান করলে সংক্রমিতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন; এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই সেটি বিশ্বাস করেন।

সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ বলছে, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে খুজেস্তান প্রদেশে মারা গেছেন ১৮ জন। কিন্তু গুজবে কান দিয়ে মদ্যপান করে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৬ জনের। এছাড়া দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় আলবরজে ওই মদ্যপানের কারণে সাতজন এবং পশ্চিমাঞ্চলের কেরমানশাহ প্রদেশে একজন মারা গেছেন।

ইরানে কিছু অমুসলিম সংখ্যালঘু ছাড়া বাকিদের জন্য মদ্যপান একেবারেই নিষিদ্ধ। কিন্তু স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রায়ই স্থানীয়ভাবে তৈরি ভেজাল মদ্যপানের কারণে মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

দেশটির ৩১টি প্রদেশের সবগুলোতেই করোনাভাইরাস দ্রুতগতিতে ছড়িয়েছে। এ ভাইরাসের লাগাম টানতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে সরকারের জারিকৃত নির্দেশ উপেক্ষা করে অনেক নাগরিক এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত সফর করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে।

বুধবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুশ জাহানপোর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি বলপ্রয়োগ করে নাগরিকদের চলাচল নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও কী ধরনের বলপ্রয়োগ করা হতে পারে সে ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো তথ্য দেননি তিনি। তবে দেশটির সব প্রদেশেই করোনার বিস্তার ঘটেছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও দেশটিতে এখন এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে চীনের বাইরে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ শুরু হয়েছে ইরান এবং ইউরোপের দেশ ইতালিতে।

ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনায় প্রাণ গেছে ৬৩১ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ১৪৯ জন। চীনে গত ৭১ দিনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ১৫৮ জন এবং সংক্রমিত হয়েছেন ৮০ হাজার ৭৭৮ জন। বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ২৬৮ জনে।

সূত্র : ডেইলি মেইল।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।