রোগীদের সেবায় এবার জীবন দিলেন ইতালির প্যারামেডিক
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ইতালিতে এক প্যারামেডিকের প্রাণহানি ঘটেছে। করোনাভাইরাসে সর্বাধিক আক্রান্ত দেশটির লম্বার্ডি অঞ্চলে ওই প্যারামেডিক মারা গেছেন।
দেশটির একটি দৈনিক বলছে, শুক্রবার রাতে প্যারামেডিক দিয়েগো বিয়ানকো (৪৬) মারা গেছেন। গত সাতদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। ইতালির উত্তরাঞ্চলের লম্বার্ডি এলাকার জরুরি অ্যাম্বুলেন্সে সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন তিনি।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ এবং প্রাণহানি ঘটেছে ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৭৪৭ জন। তাদের মধ্যে প্রাণ গেছে এক হাজার ৮০৯ জনের; যাদের এক হাজার ২০০ জন লম্বার্ডি অঞ্চলের বাসিন্দা।
জরুরি সার্ভিসের এই প্যারামেডিকের প্রাণহানির পর সংস্থাটির অনেক কর্মীকে স্বেচ্ছা আইসোলেশনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কর্মীদের অনেকের শরীরে ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
ইতালীয় দৈনিক কুরিয়ার ডেলা সেরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিয়েগোর সহকর্মীরা দাবি করেছেন, মৃত্যুর আগেও এই প্যারামেডিক সুস্থ ছিলেন। তবে করোনা রোগীদের সেবা দেয়ায় নিয়মিত তার শরীর পরীক্ষা করা দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
দিয়েগো বিয়ানকোর সহকর্মী ডেভিড ব্রেসকানসিন কর্তৃপক্ষের কাছে প্যারামেডিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। লম্বার্ডিয়ার স্বাস্থ্য ইউনিয়নের মুখপাত্র রিকার্ডো জার্মানি বলেছেন, দিয়েগো একজন প্রশিক্ষিত কর্মী এবং উদ্ধারকারী ছিলেন। রোগীদের সংস্পর্শে আসার আগে তিনি সবসময় ব্যক্তিগত সুরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করতেন। বয়সও কম এবং অন্য কোনও রোগেও আক্রান্ত ছিলেন না তিনি।
ইতালিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, নার্স এবং উদ্ধারকারী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এই আক্রান্তদের একজন ছিলেন দিয়েগো; যিনি করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন এক লাখ ৬৯ হাজার ৯১৫ জন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ৬ হাজার ৫২১ জন। সর্বাধিক ৩ হাজার ২১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে চীনে। সুস্থ হয়েছেন ৭৭ হাজার ৭৭৬ জন।
চীনেও করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে দেশটির বেশ কয়েকজন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর প্রাণহানি ঘটে।
সূত্র : ডেইলি মেইল।
এসআইএস/এমকেএইচ