করোনায়ও অনিয়ম, ইতালিতে আটদিনে ৫১ হাজার অভিযুক্ত
ইতালি এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। স্বাধীনতার পর এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হননি দেশটির জনগণ। করোনাভাইরাসের ছোবলে বিধ্বস্ত জনজীবন। সমস্যা মোকাবিলায় সরকার নিয়েছে নানামুখী উদ্যোগও।
এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই সপ্তাহ ধরে পুরো ইতালিতে চলছে জরুরি অবস্থা। গৃহবন্দি প্রায় ছয় কোটি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় এ যাবৎকালের রেকর্ড ৬২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৩২ জন। নতুন করে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৮৬ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ২১ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার ১২৯ মানুষ।
এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে অনেকে আবার সরকারের বেঁধে দেয়া কঠোর বিধিনিষেধের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বাসার বাইরে বের হচ্ছেন। এ কারণে গত আটদিনে ৫১ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম লা রিপুবলিকা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, একদিনে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের অভিযানে নেমে দুই লাখের বেশি মানুষের আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে আট হাজার ২৯৭ জনের বিরুদ্ধে নিয়ম না মানার অভিযোগ আনা হয়েছে। এক লাখেরও বেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ১৯৫ জন অপারেটরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ২৯ প্রতিষ্ঠান।
গত আটদিনে যে ৫১ হাজরের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে তাদের কাছে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সত্যায়িত কোনো কপি পাওয়া যায়নি। দেশটির প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে মাথাপিছু ২৬০ ইউরো জরিমানা অন্যথায় তিন মাসের কারাবাস হবে সবার।
দেশটির সরকার নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের জনগণকে করোনা মোকাবিলায় সচেতন করে তুলতে। প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুপারশপগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ খাবার মজুত রয়েছে। খাবার সংগ্রহে বাইরে বের হতে চাইলে সেক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতিপত্র লাগবে।
এ ব্যাপারে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি এক টেলিকমিউনিকেশন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করে বলেন, আমরা একটি ক্রান্তিলগ্ন পার করছি। তবে সরকার খুবই আন্তরিক, সবরকম সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। সুপারশপগুলোতে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে গৃহবন্দি কিন্তু জীবনের চাহিদা মেটানোর প্রয়োজনীয় সব উপকরণ স্বাভাবিকভাবেই আমরা পাচ্ছি।
অপর বাংলাদেশি আঁখি সীমা কাউসার বলেন, আমরা এখনও ভালো আছি। মৌলিক চাহিদা মেটাতে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে তিনি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সাংবাদিক রোম থেকে লাইভ করে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছেন। এতে দেশ-বিদেশের মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আশা করি, ভুল তথ্য দিয়ে কেউ জনমনে আতঙ্ক ছড়াবেন না।
এমএআর/বিএ