করোনায় মৃতদের পুড়িয়ে ফেলতে চায় যুক্তরাজ্য
করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে নতুন নতুন প্রাণ। যুক্তরাজ্যে রোববার নতুন করে আরও ৬৬৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এর ফলে দেশটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৬৮৩ জন। এছাড়াও নতুন করে মারা গেছেন ৪৮ জন এবং সর্বমোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮১ জনে।
এভাবে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কবরের জায়গার সংকটে দাফনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতি মানা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। সেক্ষেত্রে মরদেহ দাফন না করে পুড়িয়ে ফেলা হতে পারে। বিষয়টি বৃটেনের মুসলিম কমিউনিটিকে ভাবিয়ে তুলছে।
মুসলিম এনগেজমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামক একটি সংগঠনের ওয়েবসাইটে শনিবার এই তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে, সরকার ‘ইমার্জেন্সি করোনাভাইরাস বিল ২০১৯-২১’ নামে পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপন করেছে। এই বিলের খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে একদফা বিলটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে। সোমবার (২৩ মার্চ) তা পাস করার লক্ষ্যে আবারও পার্লামেন্টে তোলা হবে।
এই বিলটি পাস হয়ে গেলে বর্তমানে বৃটেনের বহু ধর্মের মানুষের স্বস্ব ধর্মমতে দাফন-কাফনের যে অধিকার আছে সেটা খর্ব হয়ে যাবে। স্থানীয় কাউন্সিল যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে দাফন করতে পারবে। কাউন্সিল চাইলে ধর্মমতে দাফনের অনুমতি দেবে নতুবা মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে পারবে। তখন মুসলমানদের ইচ্ছার কোনো গুরুত্ব থাকবে না।
বর্তমান ‘পাবলিক হেলথ ১৯৮৪ ধারা ৪৪ (৩)’ আইনে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তাদের নিজ নিজ ধর্মমতে মরদেহ দাফনের অধিকার দেয়া আছে। ফলে স্থানীয় কাউন্সিল চাইলেই কারও মরদেহ জ্বালিয়ে ফেলতে পারে না। তাই পার্লামেন্ট চাচ্ছে এই আইনকে পরিবর্তন করতে। আইন পাস হয়ে গেলে ইসলামী নিয়মে দাফনের কোনো সুযোগ থাকবে না। তাই বিলটি পাস করার আগে তাতে মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে এমপিরা ভূমিকা রাখতে পারেন।
মুসলিম এনগেজমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, হিউম্যান রাইট আইন-১৯৯৮ অনুসারে মানুষের ধর্মীয় অধিকার উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তাই মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় এমপিদের সোচ্চার হতে হবে। সংগঠনটি বৃটেনের সর্বস্তরের মুসলমানদের তাদের নিজ নিজ এলাকার এমপির কাছে চিঠি লিখতে অনুরোধ জানিয়েছে। বিলটিতে যেন প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়। মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় অধিকার যাতে রক্ষা হয়।
এই লিংকে www.mend.org.uk/whats-new/action-alerts/covid19-bill ক্লিক করে খুব সহজেই নিজ নিজ এলাকার এমপির কাছে চিঠি লেখা যাবে।
উল্লেখ্য, বৃটেনে সাড়ে ছয় কোটি মানুষের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ৩০ লাখ। মুসলমান ছাড়াও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের মরদেহ দাফন করা হয়।
বিএ/পিআর