করোনা থেকে এখনও সুরক্ষিত বিশ্বের যেসব দেশ
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত করা হয় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এরপর প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে। ওয়ার্ল্ডওমিটারস ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ২০৮টির মতো দেশ ও অঞ্চলকে আক্রান্ত করেছে কোভিড-১৯। প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ৬৯ হাজার ৪৮০ জনের। সারাবিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ৭৪ হাজার ৩৪৬ জন।
অনেক দেশেই করোনার প্রকোপ মহামারি আকার নিয়েছে। তবে এই ঘাতক ভাইরাস এখনও থাবা বসাতে পারেনি বিশ্বের ডজনখানেকের বেশি দেশে। এই দেশগুলো এতটাই ছোট যে বিদেশি পর্যটক প্রায় ঢোকে না বললেই চলে। তাই ঢুকতে পারেনি এই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসও।
এসব দেশের একটি উত্তর কোরিয়া। চীনেরই একেবারে পাশে থাকা উত্তর কোরিয়াতে করোনাভাইরাস এখনও থাবা বসাতে পারেনি বলেই দাবি সে দেশের সরকারের। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, উত্তর কোরিয়ার ‘স্বৈরাচারী’ শাসক কিম জং উন বিশ্বের কাছে প্রকৃত তথ্য লুকিয়েছেন।
জাতিসংঘের দেয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে জি নিউজের প্রতিবেদন বলছে, একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ বা দেশে এই ভাইরাস ঢুকতে পারেনি এখনও। এই সব দেশের জনসংখ্যা ১০ হাজারেরও কম বা কোথাও তার একটু বেশি।
জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশের সংখ্যা ১৯৩টি। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস রিসোর্স সেন্টারের তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডজনখানেকের বেশি দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এগুলোর বেশির ভাগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপরাষ্ট্র। দেশগুলো হলো কমোরোস, কিরিবাতি, লেসোথো, মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, উত্তর কোরিয়া, পালাউ, সামোয়া, সাও তোমে অ্যান্ড প্রিনসিপ, সলোমোন আইল্যান্ডস, তাজিকিস্তান, টোঙ্গা, তুর্কমেনিস্তান, টুভালু ও ভানুয়াতু।
এই তালিকায় এমন ১০টি দেশ আছে, যেখানে পর্যটক বা বিদেশি নাগরিক প্রায় ঢোকে না বললেই চলে। ফলে এই দেশগুলোতে এমনিতেই বজায় রয়েছে সামাজিক দূরত্ব। তাই এই দেশগুলো এখনও করোনাভাইরাসের থাবা থেকে মুক্ত।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত না হলেও নাউরুর মতো কিরিবাতি, টোঙ্গা, ভানুয়াতু ও অন্যান্য ছোট দ্বীপরাষ্ট্রেও একই ধরনের জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাজ্যের লিভারপুল স্কুলের ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পিটার ম্যাকফারসন বলেন, তথ্যপ্রমাণ বলছে, সব দেশেই করোনা পৌঁছে যাবে। তবে দ্বীপরাষ্ট্রগুলো যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক অ্যান্ডি টাটেম। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, তাতে আমি নিশ্চিত নই যে কোনো দেশ এই সংক্রামক রোগ থেকে রেহাই পাবে।’
তবে তিনি এ-ও বলেছেন, নাউরুর মতো দেশগুলো লকডাউনের মতো যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা কাজ করতে পারে। তবে চিরকাল একই ফল না-ও আসতে পারে।
এসআর/পিআর