করোনা নিয়ে চিন্তা বাড়াচ্ছে উপসর্গবিহীন রোগী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:০৩ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০

প্রতিবেশি রাশিয়া থেকে ফেরত আসা করোনার সুপ্ত বাহকদের মাধ্যমে নতুন করে মহামারি শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে চীন। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুইফেনহে শহরে করোনাভাইরাসের নতুন মহামারির শঙ্কায় লকডাউন জারি করা হয়েছে।

সম্ভাব্য মহামারি ঠেকাতে এবং চিকিৎসায় সুইফেনহে শহরে করোনার লক্ষণবিহীন রোগীদের আইসোলেশনে রাখার জন্য মাত্র ৬ দিনেই ১৩ তলাবিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই মুহূর্তে চীনে করোনাভাইরাসের মূল উৎস রাশিয়াফেরত নাগরিকরা। সুইফেনহে শহরের বাসিন্দাদের অধিকাংশের ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে প্রতিবেশি রাশিয়ায়।

সুইফেনহে শহরে তৈরি নতুন অস্থায়ী হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৫৮০টি। আবাসিক এই শহরের সঙ্গে রাশিয়ার ২৭ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত রয়েছে। রাশিয়ায় যারা ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে যাচ্ছেন; সেখান থেকে ফেরার পর তাদের শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া না গেলেও কিছুদিন পর তারা আক্রান্ত হচ্ছেন।

jagonews24

এই ভাইরাসের সুপ্ত বাহকরা দেশে ফেরায় নতুন করে শহরটিতে মহামারির শঙ্কা দেখা দিয়েছে; যা বাড়িয়েছে চীনের উদ্বেগ। তবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কারণে দেশটিতে সামগ্রিকভাবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

৭০ হাজার মানুষের সুইফেনহে শহরে এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে ২৪৩ জনই রাশিয়া থেকে ফিরে আসার পরই করোনায় আক্রান্ত। একশ জনের বেশির করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে; কিন্তু তাদের শরীরে করোনার কোনো লক্ষণই ছিল না।

গত বুধবার চীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হেইলোংজিয়াং প্রদেশে পুরোপুরি লকডাউন জারি করা হয়েছে। কিন্তু একই দিনে এই শহরটি থেকে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের বেশি দূরের করোনার উৎপত্তিস্থল উহান শহরের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

হেইলোংজিয়াংয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, এই অঞ্চলে বিদেশফেরত ৭৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৫ জনের শরীরে করোনার লক্ষণ ছিল না।

corona-patients.jpg

চীনের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সিজিটিএন বলছে, সুইফেনহে শহরের কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবীরা সরকারি একটি কার্যালয়কে অস্থায়ী হাসপাতালে রুপ দিয়েছে। গত ৬ এপ্রিল থেকে ফ্যাং চ্যাং নামের এই হাসপাতালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ এপ্রিল। ১৩ তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের ৯টি ফ্লোরে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা হবে; যারা কোনো লক্ষণ ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির অন্যান্য শহরের শত শত স্বাস্থ্যকর্মীকে সেখানে পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবারও চীনে নতুন করে করোনায় কেউ মারা যাননি; যা দেশটির করোনা নিয়ন্ত্রণের সফলতার চিত্র তুলে ধরছে। গত সপ্তাহে করোনার উৎপত্তিস্থল উহানে ৭৬ দিনের লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে এই শহরে প্রথমবারের মতো করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত হন দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা।

চীনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ২৪৯ এবং মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৪১ জন। চীনের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের ২২০টিরও বেশি দেশ এবং অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ। করোনায় এই মুহূর্তে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটিতে ২৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাক ৮৭ হাজার ১৭৩ জন।

সূত্র : ডেইলি মেইল।

এআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।