লকডাউন: নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা ও নিজের ‘রাজনৈতিক লাভের’ জন্য নানা ধরনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের অভিযোগে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার অকল্যান্ড হাইকোর্টে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুই ব্যক্তি আরও বেশ কিছু অভিযোগ এনে এই মামলা করেন। দেশটির জাতীয় দৈনিক নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের এক অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মামলাকারী ওই দুই ব্যক্তি যুক্তি হিসেবে বলছেন, করোনায় মৃত্যুর হার অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও তার তুলনায় দেশজুড়ে ‘লেভেল ফোর’ অর্থাৎ চতুর্থ স্তরের লকডাউন ঘোষণা করায় যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে তা কোনোভাবেই উপযুক্ত নয়।
তাদের দাবি, এই বিধিনিষেধ তাদেরকে অবৈধভাবে আটকে রেখেছে, আর তাই তারা ‘হাবিয়াস কর্পাসের’ অধীনে আদালতে একটি রিট আবেদন করেছেন; যা মূলত একজন কারাবন্দী তার বন্দীদশা থেকে মুক্তির জন্য করে থাকেন।
এরপর আদালত ওই দুই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কর্মকর্তাদেরকে অবশ্যই তাদের আটকের কোনো বৈধ বা ন্যায়সঙ্গত কারণ দেখাতে হবে। প্রথমজন ‘হোম ডিটেনশনে’ আছেন। তিনি বলছেন, এই লকডাউন ঘোষণার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি জেসিন্ডা আরডার্নের কাছে নেই।
তিনি বিচারক ম্যারি পিটার্সকে বলেন, ‘গোটা বিষয়টাই হাস্যকর’ এবং এটা কোনো ‘প্যানডেমিক’ নয় এটা হলো ‘প্যানিক-ডেমিক’। তিনি দাবি করছেন, তার যে দণ্ড চলছে, তাতে করে তিনি প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে যাওয়ার অধিকার রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি জেসিন্ডা আরডার্নকে ‘হিটলারের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। দেশজুড়ে এই লকডাউন ঘোষণার বিষয়টিকে তুলনা করেছেন ‘হলোকাস্টের’ সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘একটা সমাজে বসবাসের গণতান্ত্রিক অধিকার আমি কাউকে হরণ করতে দেব না।’
মামলাকারী অপর ব্যক্তির অভিযোগ, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতি হাসপাতালগুলো বেশি মনযোগী হওয়ায় কোভিড-১৯ রোগের তুলনায় অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ এখন বেশি মারা যাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি এটা করেছেন তার নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে।’
মহামারি নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে নিউজিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত ১ হাজার ৪২২। তবে আক্রান্তদের মধ্যে ৮৬৭ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। দেশটিতে এখন লকডাউন চলছে।
এসএ