ভারতে করোনায় আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই উপসর্গবিহীন: আইসিএমআর
‘ভারতে করোনায় আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই উপসর্গবিহীন। অর্থাৎ তাদের শরীরে করোনার কোনো লক্ষণ পরীক্ষার আগে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক।’ ভারতের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (আইসিএমআর) বিজ্ঞানী ড. রমন আর গঙ্গাখেদকার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
ভারতীয় এই বিজ্ঞানী বলেছেন, ৮০ শতাংশ রোগীই করোনার সুপ্তবাহক। তাদের শনাক্ত করাই আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়। কন্ট্র্যাক্ট ট্রেসিং করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
দেশটিতে এমন অসংখ্য মানুষ থাকতে পারেন; যারা এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেও তাদের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। দেশটির বিজ্ঞানীদের চিন্তা বাড়াচ্ছে এ ধরনের সংক্রমিত রোগীরাই। কারণ তারা শনাক্ত হওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবেই পরিবার ও অন্যান্যদের সংস্পর্শে এসেছে। তাদের কেউ সংক্রমিত হলে সেটি আবার অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু পুরো বিষয়টিই থাকছে শনাক্তের বাইরে।
ভারতে সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৭ হাজার ৬১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন অন্তত ৫৫৯ জন। দেশটির শীর্ষ এই বিজ্ঞানী বলেন, সুপ্ত সংক্রমিত মানুষদের শনাক্ত করা কঠিন। তাদেরকে শনাক্ত করার জন্য যারা পজিটিভ হয়েছেন; তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে পরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রায় প্রত্যেকেই পরীক্ষা করতে হবে; যা প্রায় অসম্ভব।
ড. রমন আর গঙ্গাখেদকার বলেন, ভারতে করোনার পিক ততবেশি হবে না। তবে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আমরা এটি আরও ভালোভাবে মূল্যায়ন করার অবস্থানে থাকব।
উপসর্গবিহীন রোগী বেশি পাওয়া যাওয়ায় কোভিড-১৯ পরীক্ষায় কোনো ধরনের পরিবর্তন আনা হবে কিনা; এমন এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় এই বিজ্ঞানী বলেন, পরীক্ষায় কী পরিবর্তন করা যেতে পারে? এটার কোনো সুযোগ নেই। যেসব এলাকা সংক্রমণপ্রবণ অথবা হটস্পট; সেখানে কারও ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিলেই করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সেব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।
এর আগে, রোববার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল উপসর্গবিহীন লোকজনের পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, সম্প্রতি ৭৩৬টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। যাদের মধ্যে ১৮৬ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এই মানুষেরা জানতেন না যে তারা করোনাভাইরাস বহন করে চলেছেন।
এসআইএস/এমকেএইচ