করোনায় মৃত চিকিৎসকের দাফনে বাধা, রড-লাঠি নিয়ে হামলা
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তামিলনাড়ু প্রদেশে করোনায় মৃত এক চিকিৎসকের দাফন অনুষ্ঠানে লাঠি, রড নিয়ে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় একদল জনতা। এতে ওই চিকিৎসকের পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও বন্ধু আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর তামিলনাড়ু পুলিশ অন্তত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের প্রখ্যাত চিকিৎসক সিমন হারকিউলিস করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। রোববার রাতে তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা চেন্নাইয়ে দাফনের জন্য নেন। এ সময় স্থানীয় জনতা রড-লাঠি নিয়ে সেখানে হামলা চালায়।
পরিবারের সদস্যরা হিন্দু রীতি অনুযায়ী মরদেহ না পুড়িয়ে দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সোমবার ভোরের দিকে একজন বন্ধু পরিবারের কোনো সদস্যের উপস্থিতি ছাড়াই ওই চিকিৎসককে দাফন করেন। ওই বন্ধু বলেন, নিউরোসার্জন সিমন হারকিউলিসের এ ধরনের শেষ বিদায় প্রাপ্য ছিল না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ মিনিটকে তিনি বলেন, এমনকি তার প্রতি মৌলিক মানবাধিকারটুকুও দেখানো হয়নি। বিদায় জানানোর জন্য তার স্ত্রী-পুত্র কেউই সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, লাঠি এবং রড নিয়ে স্থানীয় অন্তত ২০ জনের একটি দল চিকিৎসক হারকিউলিসের বন্ধু ও পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্য, বন্ধু ছাড়াও আরও দুই অ্যাম্বুলেন্স চালক আহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, হামলাকারীরা সমাধিস্থলের পাশের বাসিন্দা। করোনায় মৃত ব্যক্তিকে সেখানে দাফন করা হলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন উদ্বেগ থেকে স্থানীয়রা বাধা দিয়েছে।
চিকিৎসক প্রদীপ বলেন, এই মহামারির সময় বাড়িতে থাকার পরিবর্তে প্রতিনিয়ত রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলেন চিকিৎসক সিমন হারকিউলিস। একজন রোগীর মাধ্যমে তিনি করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন।
তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সি বিজয়বাস্কর এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই চিকিৎসকের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়।
দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় মৃত রোগীর দাফনের ব্যাপারে লোকজনকে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, যদি সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হয় তাহলে করোনায় মৃত ব্যক্তিকে দাফন করা নিরাপদ।
এসআইএস/এমকেএইচ