লকডাউন: ইউরোপে দূষণজনিত মৃত্যু থেকে রক্ষা ১১ হাজার মানুষের
করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে যেন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্ব, আবার সেই একই ভাইরাসের প্রভাবেই অন্যান্য কারণে মৃত্যুহার কমে গেছে আশ্চর্যজনকভাবে। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে লকডাউন নির্দেশনা জারি করেছে বেশিরভাগ দেশ। বন্ধ কলকারখানা, গাড়ি চলাচল, গৃহবন্দী কোটি কোটি মানুষ। ফলে সারাবিশ্বেই বায়ুদূষণ কমে গেছে রেকর্ড পরিমাণ। এর ফলে শুধু ইউরোপেই অন্তত ১১ হাজার ৩০০ জন দূষণজনিত মৃত্যুর হার থেকে বেঁচে গেছেন বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
হেলসিঙ্কি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) বৃহস্পতিবার তাদের এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর ফলাফলের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বিশ্লেষক লোরি মিলিভার্টা বলেন, ‘এটিকে ইউরোপের সব মানুষ এক মাস ধূমপান বন্ধ করে দেয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে জনস্বাস্থ্য ও জীবনমানের অসাধারণ উপকারের বিষয়টি তুলে ধরেছে, যা একটি টেকসই উপায়ে অর্জন করা যেতে পারে।’
লকডাউনের প্রভাবে জার্মানি, ব্রিটেন (বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে) ও ইতালি প্রতিটি দেশেই অন্তত দেড় হাজার করে মানুষ দূষণজনিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।
সিআরইএ জানিয়েছে, লকডাউনের কারণে ইউরোপীয় নাগরিকদের নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মুখোমুখি হওয়ার হার কমে গেছে গড়ে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। মূলত যানবাহনের ধোঁয়া থেকেই বিষাক্ত এই গ্যাস নির্গত হয়।
ইউরোপের ২১টি দেশে চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, সেখানে পরিবহন, শিল্প কারখানা ও কয়লা ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান থেকে উৎপন্ন হওয়া বিষাক্ত বস্তুকণার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে স্বাভাবিকেরও ১২ শতাংশ নিচে। লকডাউনের কারণে দেশগুলোতে অন্তত ছয় হাজার শিশু অ্যাজমা আক্রান্ত হওয়া থেকে বেঁচে যাচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পরিবেশ সংস্থার তথ্যমতে, বায়ুদূষণের ফলে ইইউ’র ২৭টি সদস্য দেশ ও সাবেক সদস্য ব্রিটেনে প্রতি বছর অন্তত চার লাখ মানুষের অকালমুত্যু হয়।
সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/জেআইএম