ইমিউনিটির অভাবে চীনে আবারও ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা
দ্বিতীয় দফায় চীনে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে চীন এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। দেশটির শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, কমিউনিটির মধ্যে ইমিউনিটির অভাবে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ তৈরি হতে পারে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রথমদিকে চীনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি থাকলেও গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় চীন এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা আবারও বাড়তে শুরু করেছে।
ফলে দেশজুড়ে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে, চীনা সরকারের শীর্ষ চিকিৎসা উপদেষ্টা ডা. ঝং নানসান সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন যে, করোনার উৎপত্তিস্থল উহানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই ভাইরাসের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করেছে।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮২ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং কমপক্ষে ৪ হাজার ৬৩৩ জন মারা গেছে।
জানুয়ারিতে দেশটিতে সংক্রমণের হার দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল। যার ফলে উহান লকডাউন করা হয় এবং সেখানে ভ্রমণের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে চীনে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ৮৮৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এক মাস পরেই প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা কমতে দেখা গেছে। চার সংখ্যার জায়গায় আক্রান্ত দুই সংখ্যায় নেমে আসে।
গত ৬ মার্চ চীনে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৭। করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে চীনের মানুষ। লকডাউন শিথিল করা হয়েছে এবং কিছু স্কুল ও ফ্যাক্টরি খুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ডা. ঝং নানসান বলছেন, পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তাই বলে এটা নিয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে হবে না।
চীনে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ নিয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। গত কয়েক সপ্তাহে চীনে নতুন করে আক্রান্ত বাড়ছে। বিশেষ করে উহান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হেইলংজিয়াং প্রদেশে এবং জিলিনে আক্রান্ত বাড়তে শুরু করেছে।
ডা. ঝং নানসান বলছেন, এই মুহূর্তে যেসব চীনা নাগরিক কোভিড-১৯য়ে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই ইমিউনিটির অভাবেই আক্রান্ত হচ্ছেন। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি বলেন, আমরা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। ডা. ঝং নানসানকে চীনে সার্সের হিরো বলা হয়। ২০০৩ সালে সার্সের সময় তিনি ওই মহামারি মোকাবিলায় লড়াই করেছেন। বর্তমান সময়ে তিনি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
গত ২০ জানুয়ারি এই চিকিৎসকই চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভিতে জানিয়েছিলেন যে, করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রিমত হয়।
টিটিএন/পিআর