ভ্যাকসিন বেরোলেই সংক্রমণ শেষ হবে না, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে প্রথমদিকের ভ্যাকসিনগুলো বাজারে আসলেই সংক্রমণ পুরোপুরি শেষ হবে না। সেগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও তা মোটেও অস্বাভাবিক নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, ভ্যাকসিন নেয়ার পর থেকেই যদি কেউ ভাবতে শুরু করেন, আর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই, তবে মস্ত বড় ভুল করবেন তিনি। কারণ, সেসময় উপসর্গ না থাকলেও পরে আবারও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন ভ্যাকসিনগ্রহীতা।
এ বিষয়ে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের প্রফেসর রবিন শ্যাটক বলেন, ‘দেখতে হবে ভ্যাকসিনগুলো সংক্রমণ পুরোপুরি প্রতিরোধ করছে কি না? নাকি আক্রান্ত হয়ে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ঠেকাতে পারছে কি না? হয়তো দেখা যাবে, এ দুটি ক্ষেত্রে কোনও কাজেই লাগছে না ভ্যাকসিনগুলো।’
ভ্যাকসিন সংক্রমণ প্রতিরোধ করবেই তা একেবারে সঠিক নয় বলে মনে করেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপ্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইমিউনোলজিস্ট ডেনিস বার্টন।
‘ভ্যাকসিন নেয়া মানেই পুরোপুরি সেরে ওঠা’ এমন ভাবনা সদ্য লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসা দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ইউভিার্সিটির অ্যাসোসিয়েট ভাইস চ্যান্সেলর মিশেল কিঞ্চ।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন নেয়ার পরের দিনই অনেকে ভাবতে শুরু করেন, আর কোনও চিন্তা নেই। আমি বরাবরের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারব। এটা অনেক বড় ভুল। ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও তিনি ফের সংক্রমিত হতে পারেন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, প্রতি বছর বিশ্বে অন্তত ৩০ লাখ মানুষকে কোনও সংক্রমণে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচায় বিভিন্ন ভ্যাকসিন। তবে সেগুলো যে শতভাগ সফল, তা নয়। যেমন- হামের ভ্যাকসিন। এটি নেয়ার পরেও অন্তত ৩ শতাংশ মানুষের হাম হতে দেখা গেছে। যদিও তা ততটা ভয়ঙ্কর হয় না। কিন্তু তাদের মাধ্যমেও হামের সংক্রমণ ছড়ায়।
এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্টনি ফওসি বলেন, ‘কেউ যেন মনে না করেন ভ্যাকসিন বাজারে আসা মানেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে জিতে যাওয়া। সংক্রমণ তার পরেও ঘটতে পারে। কারণ, কোনও ভ্যাকসিনেই সংক্রমণ একেবারে চলে যাবে, এটা শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না। তা কোনওদিনই সম্ভব হয়নি।’
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
কেএএ/