লাতিন অঞ্চলে করোনায় মৃত্যু লাখ ছাড়াল
অডিও শুনুন
লাতিন অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছেই। সবশেষ মঙ্গলবারের হিসাব অনুযায়ী ল্যাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মহামারি করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশি ব্রাজিলে। অঞ্চলটির সরকারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী এই তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
গোটা অঞ্চলটিতেই আশঙ্কাজনক হারে করোনা তার বিস্তার ছড়িয়ে চলেছে। শুধু লাতিন অঞ্চলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২১ লাখের বেশি। সবচেয়ে বেশি শনাক্ত ব্রাজিলে। এরপর সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশগুলোর তালিকায় আছে মেক্সিকো, পেরু ও চিলির নাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অঞ্চলটিতে সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক করেছে।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই ব্রাজিলের অবস্থান। দেশটিতে এখন পযর্ন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৬ জন। এসব আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ৫২ হাজার ৬৪০ জন ইতোমধ্যে মারা গেছে। তবে দেশটির সরকারের করোনা মোকাবিলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। খোদ প্রেসিডেন্ট নেপথ্যে।
করোনা মহামারিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের প্রশাসন। প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের জারি করা লকডাউনের বিরুদ্ধে শুরু বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন স্বয়ং দেশটির প্রেসিডেন্টও। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের আহ্বান জানানোর পর তিনি বরখাস্ত করেছেন দুজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে।
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াসহ আশেপাশের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট এলাকাগুলোর জনসমাগমস্থলে প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোকে মাস্ক পরার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নিয়ম ভঙ্গ করলে তাকে জরিমানাও গুনতে হবে। ‘কিছু লোক মারা যাবে এটিই জীবন। এজন্য কারখানা বন্ধ করা যায় না’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
অঞ্চলটির আরেক দেশে মেক্সিকোতে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনে রেকর্ড ৬ হাজার ২৮৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত এবং আরও ৭৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে মঙ্গলবার ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশটি। তাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
বিশ্বে করোনায় শীর্ষ সংক্রমিত দেশের তালিকায় সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে পেরু। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি এখন। মারা গেছে প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ। আর এরমধ্যে বাধ্যতামূলক লকডাউনে শততম দিন পার করেছে পেরু।
চিলিতেও করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে। সংক্রমণে শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় চিলির অবস্থান অষ্টম। তবে তুলনামূলক মৃতের সংখ্যা কম; সাড়ে চার হাজারের বেশি। এদিকে প্রায় দুই লাখ রোগী নিয়ে শীর্ষ সংক্রমিতে দেশের তালিকায় মেক্সিকোর অবস্থান এখন বারোতম।
চিলির সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া কলম্বিয়াতেও আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছেই। এ পযর্ন্ত দেশটিতে শনাক্ত কোভিড-১৯ পজিটিভ মানুষের সংখ্যা ৭৩ হাজার ও মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে। অঞ্চলটির অন্যান্য দেশগুলোতও সংক্রমণ বাড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন কোটি ছুঁই ছুঁই।
ইউরোপ এবং আমেরিকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে বর্তমানে এশিয়া, দুই আমেরিকা ও আফ্রিকা হয়ে উঠছে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন উপকেন্দ্র। প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা এই ভাইরাস গত এক মাসে আরও বেশি বিস্তার ঘটিয়ে কেড়েছে লাখো মানুষের প্রাণ। চীনে উৎপত্তির পর গত এক মাসে সংক্রমণ ছিল সবচেয়ে বেশি।
এসএ