করোনায় থমকে গেছে টিকাদান, শিশুমৃত্যু বৃদ্ধির শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩০ এএম, ১৬ জুলাই ২০২০

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে শিশুদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগপ্রতিরোধী টিকাদান একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে শিশুমৃত্যুর হার ভয়ানকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সম্প্রতি ৮০টি দেশে জাতিসংঘ পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, তিন-চতুর্থাংশ দেশেই টিকাদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে, প্রায় তিন দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ডিপথেরিয়া, টিটেনাস ও হুপিং কাশি প্রতিরোধী টিকাদানের হার কম দেখা গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, টিকা না পাওয়ায় শিশুদের মধ্যে রোগ সংক্রমণ ও মৃত্যুহার অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।

ইউনিসেফ ও ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পিপিই) না থাকা, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, স্বাস্থ্যকর্মী সংকট ও ঘরছাড়তে অনীহার কারণে চলতি বছর শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত অন্তত ৩০টি হাম প্রতিরোধী টিকাদান অভিযান বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, করোনা মহামারির আগে থেকেই হামের ভয়াবহ সংক্রমণের মুখে ছিল বিশ্ব। ২০১৮ সালে এতে আক্রান্ত হয়েছিলেন অন্তত এক কোটি মানুষ, এর মধ্যে মারা গেছেন কমপক্ষে ১ লাখ ৪০ হাজার। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল শিশু।

jagonews24

ইউনিসেফের হিসাবে, প্রতিবছর সময়মতো টিকাদানের কারণে জীবন বেঁচে যায় অন্তত ৩০ লাখ মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের। তারপরও বহু জায়গা এ কার্যক্রমের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছর এমন ১৫ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন, যাদের টিকা দিতে পারলে হয়তো জীবনরক্ষা সম্ভব হতো।

জাতিসংঘের সহযোগ সংস্থাটির হিসাবে, ২০১৯ সালে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ শিশু হাম-ডিপথেরিয়ার মতো রোগের টিকা পায়নি। এদের অধিকাংশই আফ্রিকা অঞ্চলের এবং দুই-তৃতীয়াংশ হচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, ব্রাজিল, কঙ্গো, ইথিওপিয়াসহ ১০ দেশের বাসিন্দা।

ইউনিসেফ প্রধান হেনরিয়েট ফোরের মতে, করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বব্যাপী নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনাকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই টিকাদান কার্যক্রমের আরও অবনতি রোধ করতে হবে... যেন অন্যান্য রোগের মাধ্যমে শিশুদের জীবন হুমকিতে না পড়ে। আমরা একটি স্বাস্থ্য সংকটের সঙ্গে আরেকটির বিনিময় করতে পারি না।’

সূত্র: বিবিসি
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।