গণতান্ত্রিক আন্দোলন ‘গ্রহণযোগ্য’ নয় : থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২০

থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিনের জেঁকে বসা রাজতন্ত্রের অবসানের লক্ষ্যে গত কিছুদিন ধরে যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছেন দেশটির তরুণরা, তা ক্রমান্বয়ে আরও জোরদার হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের ভিত নাড়ানোর এই আন্দোলন নিয়ে বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ূত চান ও ঝাঁ বলেছেন, থাইল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষই চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ মনে করেন।

২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর তৈরি সংবিধানে সংশোধন এবং প্রায়ূত চান ও ঝাঁ নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিদায়ের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিন সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসছেন দেশটির শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বেশ কিছু গোষ্ঠী।

সোমবার দেশটিতে রাজতন্ত্রবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এই বিক্ষোভে দেশটির অচ্ছুত রাজতন্ত্রের অবসানের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। এমনকি বিক্ষোভকারীদের অনেকে থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের ভূমিকার ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনার আহ্বান জানান।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে রাজতন্ত্র কিংবা রাজপরিবারকে নিয়ে সমালোচনা অথবা অপমানজনক কোনও মন্তব্য করলে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। কিন্তু থাইল্যান্ডে গত কয়েকমাস ধরে যে বিক্ষোভ চলছে, তাতে প্রতিনিয়ত রাজতন্ত্রবিরোধীদের কণ্ঠে দেশের শাসনব্যবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

দু’দিন আগে দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল। কিন্তু তারপরও দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ূত চান ও ঝাঁ বলেছেন, ‘দেশের বেশিরভাগ মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। সরকারের প্রত্যাশা তারা (বিক্ষোভকারীরা) বিশৃঙ্খলা তৈরি করার কোনও সুযোগ পাবেন না।’

তিনি বলেন, ‘এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ থাইদের কাছে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’

থাইল্যান্ডের রাজপরিবার অতি-ধনী; অঢেল সম্পদের মালিকানা রয়েছে এই পরিবারের হাতে। দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রে রাজপরিবারের অবস্থান। শক্তিশালী সেনাবাহিনী এবং দেশটির এলিট শ্রেণির ধনকুবেরদের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে।

২০১৬ সালে রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের মৃত্যুর পর দেশটির সাংবিধানিক রাজা হন ৬৬ বছরের মহা ভাজিরালংকর্ন। তিনবার বিয়ে করেছেন এই থাই রাজা, রয়েছে সাত সন্তান। প্রায়ই বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল ইয়ট কিংবা পুরো হোটেল ভাড়া নিয়ে ডজন ডজন রক্ষিতাসহ ওঠেন ভাজিরালংকর্ন।

চলতি বছরের মার্চের দিকে করোনাভাইরাস মহামারি থেকে বাঁচার আশায় জার্মানিতে স্বেচ্ছা-আইসোলেশনে যান রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন। সেখানে বিলাসবহুল একটি হোটেলের পুরোটাই ভাড়া করেন তিনি। এ সময় সঙ্গে নিয়ে যান ২০ জন রক্ষিতা।

ভাজিরালংকর্ন ক্ষমতায় আরোহন করার পর দেশটির বিতর্কিত মানহানিকর আইনে পরিবর্তন আনেন। এই আইনে থাই রাজপরিবার কিংবার রাজার সমালোচকদের শাস্তি হিসেবে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়।

দেশটির গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা এই আইনেরও বিলুপ্তির দাবি তুলেছেন।

সূত্র: এএফপি, চ্যানেল নিউজ এশিয়া।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।