চলতি বছরেই আসতে পারে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন : পরিচালক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৫ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২০

করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিটেনের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, বিজ্ঞানীরা পরীক্ষার পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে সক্ষম হলে চলতি বছরেই নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে ভ্যাকসিনটি তুলে দেয়া যেতে পারে।

মঙ্গলবার অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের পরিচালক অ্যান্ড্রু পোলার্ড বিবিসি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজগুলো দ্রুতগতিতে শেষ হয়, তবেই কেবল আমরা চলতি বছরে নিয়ন্ত্রকদের কাছে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে পারবো। এরপর তথ্য-উপাত্ত পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়নের ব্যাপারে একটি প্রক্রিয়া শুরু হবে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরিকৃত করোনা ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রথম ধাপের পরীক্ষায় ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বিশ্ব অর্থনীতিকে তছনছ করে দেয়া এই রোগের ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় অন্যতম শীর্ষস্থানে রয়েছে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, বর্তমানে করোনাভাইরাসের অন্তত অর্ধ-ডজন ভ্যাকসিন পরীক্ষার শেষ ধাপে রয়েছে। এর মধ্যে চীনের তিনটি, যুক্তরাজ্যের একটি, যুক্তরাষ্ট্রের একটি এবং মার্কিন-জার্মান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি ভ্যাকসিন রয়েছে।

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষার খবর চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে গণমাধ্যমের শিরোনামে চলে আসে। ওই সময় ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে আগে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ব্যবহারের বিষয়টিকে ফার্স্ট ট্র্যাক হিসেবে বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য যেকোনও ভ্যাকসিনের ব্যাপারে ইতিবাচক তথ্য পাওয়া গেলে তা জরুরি ব্যবহারের জন্য মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন দফতরের জরুরি অনুমোদন পেতে পারে।

পোলার্ড বলেছেন, জরুরি মুহূর্তে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন যে কাজ করেছে সেটিও প্রমাণ করতে হবে।

সাধারণত ভ্যাকসিন আবিষ্কার তৈরিতে কয়েক বছর সময়ের দরকার হয়। কিন্তু চলতি মাসের শুরুর দিকে বিশ্বে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। গত ১১ আগস্ট স্পুটনিক-৫ নামের এই ভ্যাকসিনের ঘোষণা আসার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে মস্কোর ভ্যাকসিন তৈরির বৈজ্ঞানিক নীতি-নৈতিকতা ও অন্যান্য মানদণ্ড অনুসরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কাউন্সিল অব ফরেইন রিলেশনসের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক থমাস বলিকি বলেছেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কার কঠিন কিছু নয়। তবে ভ্যাকসিন নিরাপদ এবং কার্যকরী প্রমাণ করাই কঠিন। রাশিয়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি এবং অনুমোদনে যথাযথ বৈজ্ঞানিক নীতি-নৈতিকতা অনুসরণ ছাড়াই শর্ট-কাট পন্থা অবলম্বন করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস উৎপত্তি হওয়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে দুই কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটিয়েছে এবং প্রাণ কেড়েছে ৮ লাখের বেশি।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।