আনলক ৪: ভারতে প্রায় সবই সচল হচ্ছে
আনলক-৪। সিনেমা হল, সুইমিং পুল, অডিটোরিয়াম ছাড়া প্রায় সবই খুলে যাচ্ছে ভারতে। মেট্রোরেল চলতে শুরু করবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে। রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সভা-সমাবেশ করা যাবে। তবে তাতে একশো জনের বেশি লোক থাকবে না। মাস্ক পরতে হবে এবং বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে নবম থেকে দ্বাদশ বা ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভের শিক্ষার্থীরা পড়া বুঝতে স্কুলে যেতে পারবে। তাতে লাগবে তাদের বাবা-মায়ের লিখিত অনুমতি। স্কুলও ৫০ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রতিদিন ডাকতে পারবে। খবর জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের।
আনলক ৪ পর্যায়ে এ ছাড়াও যারা গবেষণা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় যেতে পারবেন তারাও। ফলে এটা এখন স্পষ্ট যে, এরপর আনলক ৫ এর সময় স্কুল, কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিমান চলাচল আপাতত শুরু হচ্ছে না। শুধু বিদেশে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে বিমান চলবে।
সরকার আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মেট্রোরেল পুনরায় চালুর ঘোষণা দিলেও তা কীভাবে চলবে এবং তাতে কী কী সতর্কতা নিতে হবে— সে সব বিষয় পরে জানানো হবে। বলা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে চালু হবে মেট্রোরেল। সূত্র জানাচ্ছে, মাঝে মাঝে কিছু আসন খালি রাখা হবে, যাতে সামাজিক দূরত্ব মানা যায়।
রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চালু হবে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে। তবে ছোট আকারে তা করতে হবে। মাস কয়েকের মধ্যে বিহারে ভোট। তাই রাজনৈতিক কর্মসূচি চালু করার কথা ভাবা হচ্ছিল। আনলক ৪ সেই সুযোগ করে দিল। ধর্মীয় উৎসব নিয়েও আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন অনেকে।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজ্যগুলি ইচ্ছে হলেই আর যখন তখন লকডাউন ঘোষণা করতে পারবে না। লকডাউন ঘোষণার আগে অনুমতি নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের। আর রাজ্যের ভেতরে ও এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়া যাবে না।
এই সিদ্ধান্ত এমন সময় নেয়া হলো, যখন ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৭৯ হাজার জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এর আগে কোনো দেশে এত মানুষ একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়নি। এ ছাড়া প্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে করনোয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার নমুনা পরীক্ষা আগের থেকে বেড়েছে। এটা ভালো লক্ষণ। তবে এটা আরও বাড়াতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিট কাভার করা প্রবীণ সাংবাদিক অবন্তিকা ঘোষ বলেন, ‘এখন না খুলে আর কোনো উপায় নেই। কতদিন আর সবকিছু বন্ধ করে বসে থাকা যায়।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন এলেও তো তা সঙ্গে সঙ্গে লোকে হাতে পাবেন না। সবার কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছনোটাও সময়সাপেক্ষ। যখন লকডাউন করা হয়েছিল, তখন সেটা উপযুক্ত সময় ছিল না। যখন রোগী বেড়েছে তখন লকডাউন করলে ভালো হতো। আর লকডাউনে অর্থনীতির কী হাল হয়েছে, এটাও সকলে দেখতে পাচ্ছেন।’
প্রধানমন্ত্রী মোদি রোববার বলেছেন, সবাইকে সাবধান থাকা ছাড়াও মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা বলা যতটা সহজ, করা কঠিন। বাসে, অটোতে, বাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন শুধু নয়, অনেক সময়ই প্রায় অসম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনার সংক্রমণ রোধে জারি নিষেধাজ্ঞাগুলো তো প্রায় সবই প্রত্যহার করে নেয়া হচ্ছে। এর ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে। কিন্তু সরকারের একটাই স্বান্ত্বনা, সুস্থ হয়ে ওঠার হারও বাড়ছে।
এসএ